শনিবার, ৩১ আগস্ট ২০২৪, ১৬ ভাদ্র ১৪৩১

বগুড়া সম্পূর্ণই আন্দোলনকারীদের দখলে

বগুড়া প্রতিনিধি
  ১৮ জুলাই ২০২৪, ১৭:৪২
ছবি-যায়যায়দিন

বগুড়া সকালে মনে হচ্ছিলনা এমন সুমসাম শহরে আন্দোলন হবে কিন্তু বেলা সারে দশটা থেকেই দু-চারজন করে ছাত্ররা আসতে শুরু করে। এক পর্যায়ে ১১টার দিকে বগুড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আন্দোলনকারী ছাত্ররা অবস্থান নেয়।

এতে করে ডিউটিরত পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সাতমাথা এলাকার দিকে পিছু হটতে থাকে। এতে করে ছাত্ররা সুযোগ পেয়ে শরের ইয়াকুবিয়া মোড়, জেলখানা মোড়, জলেশ্বরীতলা কালিমন্দীর মোড়, তিন নং রেলগেট, রেলষ্টেশন এলকা, সেউজগাড়ি, পৌর পার্ক, গোহাইলরোডসহ বিভিন্ন এলাকা ছাত্ররা দখলে নেয়।

শুরু হয়ে যায় পুলিশদের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষ। বিশেষ করে বিআরটিসি মার্কেট থেকে শুরু করে সরকারি আজিজুল হক কলেজ পর্যন্ত রেললাইনের অগোনিত পাথর পুলিশকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করে তারা। পুলিশেরাও টিআরসেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেল তুলে নিয়ে পূণরায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ছুড়তে থাকে।

বেলা ১২ থেকে ২টা পর্যন্ত পুরো শহর কাঁদানে গ্যাসের গন্ধ আরা ধোয়ায় অতিষ্ট হয়ে পরে সাধারণ মানুষগুলোও। অনেকের বাসা বাড়িতেও ঢুকে পরে এই ঝাঝালো গন্ধ।

আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ইতোমধ্যেই শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ৫৬ জন কে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এর মধ্যে ২জন পুলিশ সদস্যও রয়েছে। পুলিশের দুই জনের একজনের নাম সার্জন জিয়া। তার মোটরসাইলকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এসময় ওই পুলিশের গায়ের পোশাক খুলে লাঠির আগ্রভাবে বেধে ঘুরায় শিক্ষার্থীরা।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বেলা ১১টায় বগুড়ার বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধভাবে লাঠিসোটা হাতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দিতে শহরের সাতমাথার দিকে অগ্রসর হয়। শিক্ষার্থীদের একাংশ বেলা সোয়া ১১টার দিকে সাতমাথায় আসলে পুুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করতে দেখা যায়।

এর কিছুক্ষণ পরে বিভিন্ন দিক থেকে আবারও শিক্ষার্থীরা সাতমাথায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় পুুলিশ তাদের সরে যেতে বললে তারা উত্তেজিত হয়। পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ছুড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীরা নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে পাল্টা ইট পাটকেল ছোড়ে। এরপর থেকে সাতমাথা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বেলা ১১টার দিকে শুরু হওয়া শহরের সাতমাথায় পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ এখনো চলছে।

এদিকে বগুড়া সরকারি আজিজুল কলেজ, কলোনী, বনানী এলাকায় শিক্ষার্থীদের সাথে পুুলিশের সংঘর্ষ চলছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, বেলা ১১টার আগ পর্যন্ত বগুড়ায় মোটামুুটি যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিলো। শহরের ভেতর দোকানপাটও খোলা ছিলো। তবে বর্তমানে সাতমাথা ও এর আশপাশের এলাকা প্রায় জনশূন্য। দোকানপাটও বন্ধ। ট্রেন এবং সড়ক পথ অবরুদ্ধ। আন্দোলকারীরা এখন ( বিকেল সাড়ে চারটা) বগুড়া সদর থানার পশ্চিম এবং উত্তর পার্শের রাস্তাগুলো দখল করে আছে। সেই সাথে শহরের জেলখানা, পৌরসভা এলাকাতেও অবস্থান করছে আন্দোলনকারীরা। দুপুরে ঘন্টাখানেক খাবার বিরতি ছিলো। তার পর আবারো রাস্তা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে