রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

গোলাপগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান 

গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি
  ১৫ জুলাই ২০২৪, ১৯:২৫
ছবি-যায়যায়দিন

নানান সমস্যায় জর্জরিত সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম আমুড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত কদমরসুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০১৯ সালের ২০ মে বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত হওয়ার ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও নতুন ভবনের দেখা মেলেনি। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবেই চলছে পাঠদান।

সরেজমিন বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায়, ভবনের বিভিন্ন দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদ থেকেও পলেস্তারা খসে পড়ছে। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছেন।

বিদ্যালয় কতৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে ১ম থেকে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত ৯৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে প্রধান শিক্ষক আম্বিয়া কুলছুম চৌধুরী ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী বদলি হন। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়েই চলছে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। একমাত্র ভবনটিতে ৩টি রুম রয়েছে। এরমধ্যে একটিকে অফিস রুম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্য আরেকটি রুম দুই ভাগ করে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। যে কারণে এক সাথে দু'টি শ্রেণীর ক্লাস নিতে গিয়ে সমস্যা পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের৷ অসুবিধা হচ্ছে শিক্ষার্থীদেরও। এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়াশ ব্লকের কাজ দুই বছর ধরেও শেষ হয়নি। বিদ্যালয়ের নিরাপত্তার জন্য নেই কোন বাউন্ডারি দেওয়াল।

বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, 'প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে আমাদের ক্লাস করতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা নতুন ভবন চাই।'

সাবেক শিক্ষার্থী জাকির হোসেন বলেন, 'দেশের বেশিরভাগ প্রাইমারি স্কুলের কাজ সমাপ্ত হলেও আমাদের স্কুল এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে।'

এক অভিভাবক বলেন, 'আমরাও এই স্কুলে লেখাপড়া করেছি। বর্তমানে আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে দিতে ভয় হয়।'

আমুড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান কামরান হোসেন বলেন, 'আমাদের সাবেক সফল শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ অনেক স্কুলে ভবন করে দিয়েছেন। কিন্তু এই স্কুলে কোন রুম নেই, বসার জায়গা নেই।'

বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সদস্য সৈয়দ ফরহাদুর রব বলেন, 'নানান সমস্যা রয়েছে এই স্কুলে। শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ক্লাস করতে হয়। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করব এই স্কুলে নতুন একটি ভবন তৈরি করে দেওয়া হোক।'

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাহার উদ্দিন বলেন, '২০১৯ সালে আমাদের স্কুলটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ৫ বছর ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান চলছে। একটি রুমকে ভাগ করে দুটি ক্লাস নিতে হয়৷ যে কারণে অনেক অসুবিধা হচ্ছে।'

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বীরেন্দ্র চন্দ্র দাশ বলেন, 'ভবনের ব্যাপারে আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছি ১৮ কলামের একটা কলাম রয়েছে সেটা যেন তিনি প্রস্তুত করে দেন। আমরা সেটা অধিদপ্তরে প্রেরণ করব৷ আশা করছি অধিদপ্তর আমাদের একটি নতুন ভবন দিবেন।'

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেওয়ান নাজমুল আলম বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো, এখনো ঘোষণা করা হয়নি। ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে গিয়ে এটাকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করতে হবে৷ ভবনের জন্য আমরা একবার অধিদপ্তরে পাঠাইছি কিন্তু হয়নি৷ আবার পাঠাতে হবে৷

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে