রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে সুমাইয়ার আত্মহত্যা

শেরপুর জেলা প্রতিনিধি
  ১৪ জুলাই ২০২৪, ২০:৪৪
ছবি-যায়যায়দিন

শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলাতে ফেসবুকে প্রেম ভালোবাসা ও অভিভাবকের অমতে বিয়ে করে যৌতুকের চাপে সংসারে বনিবনা না হওয়ায় অবশেষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া (১৯) নামে এক গৃহবধূ।

শনিবার (১৩ জুলাই) রাতে উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বিশগিরিপাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। রবিবার সকালে গৃহবধূ সুমাইয়ার লাশ ও চিরকুট উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, গত ৮ মাস আগে শেরপুর সদর উপজেলার সাপমারী এলাকার শিপন নামের এক যুবকের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়ের পর প্রেমের সূত্রে বিয়ে হয় নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের আবুবকর সিদ্দিকের কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়ার।

এদিকে অভিভাবকের অসম্মতিতে বিয়ে হওয়ায় মেনে নিচ্ছিল না স্বামী শিপনের পরিবার। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও পরিবাবের লোকজনদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় প্রায়ই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত। এদিকে শিপন বিয়ের পর যৌতুকের ৮ লাখ টাকার জন্য সুমাইয়াকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ শুরু করে।

এসব বিষয় নিয়ে রাগারাগি করে গত রোজার ঈদের সময় সুমাইয়া তার বাবার বাড়িতে চলে আসার পর থেকে সেখানেই থাকছিলেন।

শনিবার রাতে সুমাইয়া মনের ক্ষোভে ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

চিরকুটে সুমাইয়া চিরকুটে লিখেন, ‘বিয়ের গোসলটাও পেলাম না। শেষ গোসলটাও পাব না। জানাযাও পাব না। আমার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অনেক ভালোবাসি তোমাকে শিপন। কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকতে দিলা না।’

সুমাইয়া আরো লিখেন, ‘আমি চাইলে দ্বিতীয় বিয়ে করে জীবনটা ভালোভাবে চালাতে পারতাম। কিন্তু আমি চাই না দ্বিতীয় কেউ আমার শরীরটা উপভোগ করুক।’

বাবা-মাকে উদ্দেশ্য করে সুমাইয়া লিখেন, ‘তোমরা মনে কষ্ট নিও না। শিপনকে সুখে রাখার জন্য আমি চলে যাচ্ছি। আমার মুখ তাকে দেখতে দিও না। আমার শরীরটা কাটতে দিও না। আমি তাহলে কষ্ট পাব।’

নালিতাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল আলম ভুঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত সুমাইয়ার লাশ ও চিরকুট উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে