আজীবনের বহিষ্কার প্রত্যাহারের দাবীতে ববি শিক্ষার্থীর “আমরণ অনশন”

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০২৪, ১৮:৩২

বরিশাল অফিস
ছবি-যায়যায়দিন

আমরণ অনশনে বসেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী যাদব কুমার ঘোষ। আজীবন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে তার এই অনশন। 

বুধবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় ব্যানার টানিয়ে এ কর্মসূচি পালন শুরু করে ওই শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, যাদব কুমার ঘোষ ৪র্থ বর্ষের দ্বিতীয় মিডটার্ম পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করেন অর্থাৎ নকল করে লিখছিলেন। আর নকল দেখে লেখার সময়ে প্রধান কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষক মো. সাকিবুল ইসলাম হাতেনাতে ধরে ফেলেন যাদবকে। 

এ সময় ওই শিক্ষক তার থেকে উত্তরপত্র নিয়ে যেতে চাইলে, যাদব কুমার ঘোষ উত্তরপত্র না দিয়ে উল্টো শিক্ষকের সাথে জোরজবরদস্তিসহ অসদাচরণ করেন। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বিষয়টি পরীক্ষা কমিটিকে জানায়। পরীক্ষা সংক্রান্ত শৃঙ্খলা কমিটির নিকট অভিযোগ দিলে তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। 

তদন্ত কমিটি পরীক্ষা আইনের একটি ধারায় শিক্ষার্থী যাদব কুমার ঘোষের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রত্ব বাতিলের শাস্তি প্রদানের সুপারিশ করেন।  যা  ৪৪ তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় উপস্থাপন করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩ তম সিন্ডিকেট সভায় ওই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশ পেশ করা হয়। 

বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার একদিনের মাথায় আমরণ অনশনে বসেছে যাদব কুমার ঘোষ। তিনি আগের পরীক্ষাগুলোতে কৃতিত্বের সহিত পাশ করার কথা জানিয়ে চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের কথা স্বীকার করলেও শিক্ষকের সাথে অসদাচরণের অভিযোগটি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। 

শ্রেণিকক্ষে ফেরার জন্য উপাচার্য বরাবর লেখা একটি আবেদনে যাদব কুমার ঘোষ দাবি করেছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সাহিত্য সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকা এবং বিভাগের সংশ্লিষ্টতায় পূজোর আয়োজন করা, অন্য শিক্ষকদের স্নেহভাজন হওয়ায় কোরামগত ক্ষোভসহ বিভিন্ন কারণে শিক্ষক সাকিবুল হাসান তাকে দেখতে পারতো না। আর সেই ক্ষোভ থেকেই তার বিরুদ্ধে এরকম কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে ওই শিক্ষক সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন। 

আমরণ অনশনে বসা শিক্ষার্থীর দাবি তাকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি এর প্রতিবাদ জানিয়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছেন, অসদুপায় অবলম্বন ও পরীক্ষা কক্ষে শিক্ষকের সাথে অশোভন আচরণের দায়ে ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে এই প্রথম কোনো শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাকিবুল হাসা মোবাইলে বলেন, আমি একটু মিটিং এ ব্যস্ত আছি এ বিষয়ে পরবর্তীতে কথা বলবো। আর আমি মোবাইলে এসব কথা বলতে চাচ্ছি না। 

যাযাদি/ এম