পাথরঘাটায় উপজেলা নির্বাচনের জের ধরে কুপিয়ে হত্যা 

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০২৪, ১৪:৫২

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
ফাইল ছবি

বরগুনা পাথরঘাটায় উপজেলা নির্বাচনের জের ধরে শহিদুল ইসলাম হাওলাদার (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুন করছে প্রতিপক্ষরা। 

শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহিদুল ইসলামের মৃত্যু হয়। এর আগে রাত সাড়ে দশটার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নের জ্ঞানপাড়া এলাকার একচল্লিশ ঘর নামক স্থানে শহিদুল ইসলামের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা থানার ওসি আল মামুন।

নিহত শহিদুল ইসলাম হাওলাদার একই এলাকার মৃত বাহার আলী হাওলাদারের ছেলে। পেশায় জেলে।

নিহত শহিদের স্ত্রী আমেনা বেগম জানান রাত দশটার দিকে জ্ঞানপাড়ার বান্দাঘাটা এলাকায় মহাজন বনি আমিনের সাথে প্রয়োজনীয় কাজ সেড়ে বাড়িতে আসার পথে মন্নান বিশ্বাসের ছেলে নাসির বিশ্বাস(৩৫), জাকির বিশ্বাসের ছেলে রুবেল বিশ্বাস,(২৫), নুরু মল্লিকের ছেলে আব্বাস মল্লিক(৪০) সহ ৫/৬ জন

কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় রাত দেড়টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ রাশিদা তানজুম হেনা জানান রাত দেড়টার দিকে শহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার শরীরে প্রায় বিশটির মতো ধাড়ালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। এছাড়াও পায়ের রগ কাটা ছিল। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় রাত দুইটার দিকে তার মৃত্যু হয়।

নিহত শহিদুল ইসলামের ছোট ভাই নাসির হাওলাদার যায়যায়দিন  পত্রিকাকে জানান, পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এনামুল হোসাইন এর নির্দেশে জাকির বিশ্বাস, নাসির বিশ্বাস, রুবেল বিশ্বাস, সোবহান বিশ্বাস, মুসা, ইসা, সোহেল বিশ্বাস, সোহেল, বাবু, আবুল, আলাউদ্দিন, আরাফাত সহ বেশ কয়েকজন মিলে কয়েকদিন আগে নিহত শহিদের মেয়ের তানিয়ার ঘর আগুনে দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এনিয়ে পাথরঘাটা থানায় মামলা করলে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর এনামুলের লোকজন আমার উপর হামলা করে আমার বাম হাত ভেঙে দেয়। পরে আমার উপর হামলার ঘটনায় আবারো থানায় মামলা করলে আমার বড় শহিদের উপর হামলা করে কুপিয়ে হত্যা করে। এনিয়ে মামলা চললেও কোন বিচার পাইননি বলে অভিযোগ করেন নাসির হাওলাদার আরও বলেন বর্তমান উপজেলার আমরা পক্ষ করি নাই তাই আজ আমার ভাইকে হত্যা করছে এবং এনামুলের বড় ভাই নাজমুল একজন  পুলিশের এ এস পি তাই তার লোকজনেরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদ্য শেষ হওয়া উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চরদুয়ানি ইউনিয়নের দক্ষিণ চরদুয়ানি, এক চল্লিশ ঘর, বান্দাঘাটা, জ্ঞানপাড়া এলাকায় বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মধ্যে শহিদকে হত্যা পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ। 

এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ওসি আল মামুন জানান,  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মৃত শহীদ কর্তৃক পূর্বেই মামলা রয়েছে। বর্তমানে মামলা চলমান আছে। শহিদুল ইসলামের হত্যাকারীদের আটক করতে রাত থেকেই অভিযান চলছে। শহিদুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে পাথরঘাটা থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে‌।

বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত লোমহর্ষক। আমি খবর পেয়ে ঢাকা থেকে পাথরঘাটার উদ্দেশ্য রওনা হয়েছি। এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য থানা পুলিশকে বলেছি।

যাযাদি/ এসএম