ওদের ঠাঁই হলো এখন শশ্মানঘাট!

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২৪, ১৬:৪৫

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
ছবি-যায়যায়দিন

সময়মত ঘর ভাড়া দিতে না পারায় বাড়ি থেকে বের করে দেয়ায় অবশেষে  শশ্মানঘাটে আশ্রয় নিয়েছেন এক দম্পতি। মেহেরপুর সদর উপজেলার জুগিন্দা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী গাংনীর ছেউটিয়া নদীর পাশে শশ্মানঘাটে  তালের পাতা আর পাটকাঠি দিয়ে ঘর তৈরী করে বসত করছেন। তবে চলমান প্রক্রিয়ায় এ দম্পতিকে ঘর দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।  

জানা গেছে, সিরাজুল ইসলামের নেই ভিটেমাটি বা অন্য কোন সহায় সম্পদ। কখনও ভাংড়ির ব্যবসা আবার কখনও ফেরি করে মালামাল বিক্রি জীবীকা নির্বাহ করেন। বসত করতেন গ্রামের একজনের ভাড়া বাড়িতে। ফেরি করে যা আয় করতেন তা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি ঘর ভাড়া দেওয়া ছিল বেশ কষ্টসাধ্য। সময়মত পরিশোধ করতে পারতেন না ভাড়ার টাকা। ভাড়া পরিশোধ না করায় চলতি মাসে তাদেরকে নামিয়ে দেয় বাড়ি থেকে। 

কোথাও কোন আশ্রয় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত শশ্মানঘাটের পাশে গাড়েন আস্তানা। আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে বাঁশ, তালের পাতা, পাটকাঠি চেয়ে নিয়ে তৈরী করেন ঝুপড়ি ঘর। সেখানে বসবাস করছেন তারা। স্থানীয়দের সহায়তায় চায়ের দোকান দিয়ে কোনমতে দুবেলা মুঠো ভাতের জোগাড়ে যুদ্ধ করছেন এই অসহায় দম্পতি। 

সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি ভ‚মিহীন সেই সাথে শারিরীক প্রতিবন্ধী। তারপরও জিবন জীবীকার তাগিদে বিভিন্ন স্থান থেকে বোতল কুড়িয়ে ও ভাংড়ি ব্যবসা করে কোনমতে দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতেন। স্ত্রীকে নিয়ে বসবাসের জন্য গ্রামের একজনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বাড়ি ভাড়া পরিশোধ না করায় তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। তাই বসবাসের জন্য সরকারী শশ্মানঘাট বেছে নিয়েছেন তিনি।

আশোশের লোকজন সিরাজুল দম্পত্তিকেহ আপন করে নিয়েছেন। অর্থনৈতিক বিপ্লবের এই যুগে মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে নানাভাবে। এর মধ্যেও সিরাজুল ইসলামের মত অসহায় দম্পতি এখনও রয়েছেন। সরকারি কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ের সহযোগিতাই পারে এসব পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে। তাই শশ্নানঘাটের পাশের এই সরকারি জায়গায় সিরাজুল দম্পত্তির জন্য ঘর তৈরী করে দেওয়ার আবেদন স্থানীয়দের। 

পর্যায়ক্রমে সব ভূমিহীন পরিবারই পাবে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গাসহ পাকাবাড়ি। আবেদন করে থাকলে  চলমান প্রকল্পের মাধ্যমেও সিরাজুল ইসলামকে ঘর দেওয়া হবে বলে জানালেন  গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা। 

যাযাদি/ এম