সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১

নাগেশ্বরীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি ৩০ হাজার মানুষ

ওমর ফারুক, নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
  ০৫ জুলাই ২০২৪, ১৬:২৯
ছবি-যায়যায়দিন

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল, চারাঞ্চল ও দীপচরসহ বিভিন্ন এলাকা। নদ-নদী তীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চলের বসতভিটায় পানি প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে বানভাসি মানুষ। অনেক পরিবার গবাদিপশু সহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।

এছাড়াও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে, আমন বীজতলা, পাট ও মৌশুমী ফসলের ক্ষেত। কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ অবস্থায় দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাষীদের। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে অন্তত ১০ হাজার পরিবারের ৩০ হাজার মানুষ। উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের ব্যাপারীরচর এলাকার ফজলুল হক জানান, তাদের পাড়িতে পানি ওঠায় অনেক দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন তারা। তার বাড়িতে ৩ বছরের শিশু সন্তান রয়েছে। তাকে নিয়ে তাদের চিন্তার শেষ নেই কোনো দুর্ঘটনা ঘটে কিনা।

আকমল হোসেন জানান, তাদের এলাকার অনেক পরিবার পানিবন্দী থাকায় খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছেন তারা। বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে রয়েছেন সেখানকার অনেক পরিবার। নারায়ণপুর ইউনিয়নের বালারহাট এলাকার মজনু মিয়া জানান, আমার চরের প্রতিটি বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। কেউ নৌকা, কেউ বা মাচা করে উঁচু স্থানে রয়েছেন। এখানকার প্রতিটা পরিবার খুব কষ্টে আছে। এমনকী তারা গবাদী পশু নিয়েও অনেকটা দুর্ভোগে রয়েছেন।

এছাড়াও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাজার করতে না পেরে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। মাছ চাষি আব্দুস সোবহান জানান, তার পুকুরে অনেক টাকার মাছ ছেড়ে দেয়া ছিলো সব মাছ বন্যার পানিতে বের হয়ে গেছে। এখন অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই মাছ চাষি।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুই দফা বন্যায় এ উপজেলার বন্যা কবলিতদের জন্য ৩০ হাজার ৫০০ মে.টন চাল এবং ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এগুলো বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও চাল চাল, ডাল, তেল, লবণসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী প্যাকেজ আকারে ৫৮৫ প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৩১৫ প্যাকেট মজুদ রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বর আহমেদ জানান, এ উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে সেখানে এর ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষনিক বন্যার্ত পরিবারগুলোর খোঁজখবর রাখছে এবং এই বিতরণ কার্যক্রম চলমান থাকবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া পয়েন্টে শুক্রবার ৭২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি আরও ৪৮ ঘন্টা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে