রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১

দাগনভূঞায় ৫  অপহরণকারী গ্রেফতার,  অপহৃতকে উদ্ধার

দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি
  ০৪ জুলাই ২০২৪, ১৯:৩৪
ছবি-যায়যায়দিন

ফেনীর দাগনভূঞা পৌর শহরে বন্ধুকে কৌশলে অপহরণ ও পরবর্তীতে মুক্তিপন দাবি করে ৬ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনায় ৫ জন অপহরণকারি ও অপহৃত রায়হান প্রকাশ রানাকে উদ্ধার করে দাগনভূঞা থানার পুলিশ। এ ঘটনার মুল হোতা নুরুল ইসলাম লাতু সহ সাত জন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান।

অভিযোগ ও থানা সুত্রে জানা যায়, ভিকটিমের পিতা মো. বেলাল এর অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দাগনভূঞা পৌরসভার সাতবাড়িয়া জামে মসজিদের বিপরীত পাশে লাতু মিয়ার কলোনীস্থ বুদ্দি (২৫) টিনসেড ভাড়া বাসায় অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ভিকটিম রায়হান প্রকাশ রানা (২২)কে উদ্ধার করা হয় এবং অপহরণ পূর্বক মুক্তিপন আদায়কারী চক্রের মূল হোতা সহ ৫জন আসামী গ্রেফতার করা হয়। ভিকটিমের পিতার এজাহার দায়েরের প্রেক্ষিতে দাগনভূঁঞা থানার মামলা করা হয়।

ভিকটিম মোঃ রায়হান প্রকাশ রানা (২২), পিতা মোঃ বেলাল, চর কলাকোপা ১নং ওয়ার্ড ৭নং ইউপি, থানা-রামগতি, জেলা-লক্ষীপুর চট্টগ্রামে মাছের ট্রলারে কাজ করেন। ঈদ-উল-আযহার ছুটি শেষে রায়হান গত ২ জুলাই সকাল আনুমানিক ১০ ঘটিকায় চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ী হইতে রওনা করে।

যাত্রাপথে ভিকটিম তাহার ব্যবহৃত মোবাইল হতে তাহার বন্ধু বুদ্দি (২৫) এর সাথে চট্টগ্রাম যাওয়ার ব্যাপারে কথাবার্তা বলে। ভিকটিম রায়হানের বন্ধু বুদ্দি মোবাইলে ভিকটিমকে ভাত খাওয়ার জন্য দাগনভূঞা জিরো পয়েন্ট বড় মসজিদের সামনে নামতে বলে। বন্ধু বুদ্দির কথামত ভিকটিম রায়হান দাগনভূঁঞা জিরো পয়েন্ট বড় মসজিদের সামনে এসে বাস হতে নামে। দাগনভূঞা জিরো পয়েন্টে নামার পরে বন্ধু বুদ্দি ভিকটিম রায়হানকে ভাত খাওয়ানোর কথা বলে একই দিন দুপুর আনুমানিা ১ ঘটিকায় দাগনভূঞা পৌরসভার সাতবাড়িয়া মসজিদের বিপরীত পাশে তাহার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়।

বন্ধু বুদ্দি ও তাহার সহযোগী বিবাদীগণ একই উদ্দেশ্যে ভিকটিম রায়হানকে দাগনভূঞা পৌরসভার সাতবাড়িয়া জামে মসজিদের বিপরীত পাশে লাতু মিয়ার কলোনীস্থ বুদ্দির টিনসেড ভাড়া বাসায় নিয়ে গিয়ে বুদ্দির সহযোগী বর্ণিত বিবাদীদের সহায়তায় ভিকটিম রায়হানকে মারধর করতঃ আটক করিয়া বিবাদী ফখরুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল হতে ভিকটিমের আত্নীয় বিবি শাহেনাজ এর মোবাইল এ ফোন করে ভিকটিমের বাবার সাথে কথা বলে ভিকটিমের পিতার নিকট ৬ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। মোবাইলে কথাবার্তার একপর্যায়ে বিবাদীগণ ভিকটিমের পিতাকে মুক্তিপনের টাকা নিয়ে দাগনভূঞা জিরো পয়েন্টে আসতে বলে।

ভিকটিমের পিতা তাহার নিকট আত্নীয় শাহনাজকে সাথে নিয়ে পরের দিন ৩ জুলাই বিকাল অনুমান ৫ ঘটিকায় দাগনভূঞা থানাধীন জিরো পয়েন্ট এলাকায় এসে উক্ত এলাকায় টহল ডিউটিরত এসআই(নিঃ) মোঃ আজমগীরকে বিষয়টি জানায়।

এসআই(নিঃ) মোঃ আজমগীর ভিকটিমের পিতার নিকট হইতে বিস্তারিত জেনে অপহরণকারীদের গ্রেফতার ও ভিকটিমকে উদ্ধারের পরিকল্পনা করে। পুলিশের কৌশল অবলম্বনের একপর্যায়ে বিবাদী আল জাবের মুক্তিপনের টাকা নেওয়ার জন্য দাগনভূঞা জিরো পয়েন্টে আসিলে পুলিশ তাহাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। বিবাদী জাবেরের স্বীকারোক্তি মতে দাগনভূঞা পৌরসভার সাতবাড়িয়া জামে মসজিদের বিপরীত পাশে লাতু মিয়ার কলোনীস্থ বুদ্দির টিনসেড ভাড়া বাসায় অভিযান পরিচালনা করে অপহরনকারী ১। আজমির হোসেন হৃদয়, ২। ফখরুল ইসলাম, ৩। জাহিদুল ইসলাম পিন্টু, ৪। টিটু দাসদের হেফাজত থেকে আটক অবস্থায় ভিকটিম রায়হানকে উদ্ধার করা হয় এবং বিবাদীদেরকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বিবাদী বুদ্দির বাসা থেকে ঘটনার মূল হোতা ১। নুরুল ইসলাম লাতুসহ বিবাদী জুয়েল, জনি, রুবেল, আশ্রাফ, রায়হান, বুদ্দিগণ দৌড়ে পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে দাগনভূঞা থানার ওসি আবুল হাসিম জানান, উক্ত ঘটনায় অপহরনকারী ৫ জনকে গ্রেফতার ও অপহৃতকে উদ্ধার করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে