শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের উন্নত মানসিকতা তৈরিতে শিক্ষকদের ভূমিকা পালন করতে হবে : শিক্ষামন্ত্রী

গাজীপুর প্রতিনিধি
  ০৩ জুলাই ২০২৪, ২২:৫১
ছবি : যায়যায়দিন

শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, শিক্ষার্থীদের উন্নত মানসিকতা তৈরিতে শিক্ষকদের ভূমিকা পালন করতে হবে। ক্ষার্থীদের সনাতন পদ্ধতিতে শিখালে চলবে না। শিখন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। শিখনের ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন অভিজাত মানসিকতার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

কারণ আমরা চাই শিক্ষার্থীরা সাম্য ও মানবিকতায় উন্নত মানসিকতার হোক। তারা যেন বিভেদ না শিখে। ব্যবহারিক জ্ঞানে যেন তারা আগ্রহী হয়ে উঠে। চাকরির বিশ্ববাজার সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা যেন ধারণা পায়। বিশ্বে আমাদের দক্ষ জনশক্তি খুবই প্রয়োজন।

দক্ষতা অর্জন করতে পারলে বিশ্ববাজারে চাকরির অভাব নেই। সুতরাং তত্ত্বীয় জ্ঞানের চেয়ে আমাদেরকে দক্ষতাভিত্তিক জ্ঞানের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। সফ্ট স্কিল শেখাতে হবে। তাহলেই আমরা স্মার্ট সিটিজেন তৈরি করতে পারব। শিক্ষার্থীদের ডায়ভার্সিফাইড নলেজ দিতে হবে।

বুধবার রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিসট্রেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট (বিয়াম) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রান্তিক পর্যায়ের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ শিক্ষকদের মাস্টার ট্রেইনা'র অংশ হিসেবে এডভান্স প্যাডাগোজি বিষয়ে ২৮দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ শেষে সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ মশিউর রহমান। সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআইএএম এর মহাপরিচালক মো. মাহবুব-উল-আলম, বিআইএম এর মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান, সিইডিপির প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মোহাম্মদ খালেদ রহীম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর এর অধ্যাপক ড. দিবা হোসেন।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বপ্রথম কলেজ শিক্ষকদের জন্য কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট (সিইডিপি) প্রজেক্ট চালু করেছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমেই আমরা কলেজ শিক্ষাকে আধুনিক ও মানসম্মত করে গড়ে তোলার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আজকের স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। কেননা প্রতিটি নাগরিককে স্মার্ট নাগরিকে পরিণত করতে হলে দক্ষ জনসম্পদ হিসেবে তাদের গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের রিসোর্স এর সীমাবদ্ধতা আছে। আপনারা শিক্ষক জানেন ক্লাসরুমের সংকটগুলো কী। এই প্রশিক্ষণ এমন কিছু না যে আপনাদেরকে এর মধ্য দিয়ে আমূল পরিবর্তন করতে পারব। এই প্রশিক্ষণ শুধু যারা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাদের সঙ্গে আপনাদের বিনিময় করে দেয়া। এই বিনিময়ের মধ্য দিয়ে আমাদের লক্ষ্য ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের স্মার্ট নাগরিকে পরিণত করা, দেশপ্রেমিক করা। আমি মনে করি, একজন শিক্ষার্থী স্মার্ট হল একইসঙ্গে দুর্নীতিবাজ হল সেটি আরো বেশি অভিশাপের। বরং আপনার নৈতিকতায় সেই শিক্ষার্থী যখন বড় হবে সেটি হবে সবচেয়ে বেশি স্মার্টনেস।

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা সৎ হয়ে উঠুক, দেশপ্রেমিক হয়ে উঠুক, বাংলাদেশকে ভালোবাসুক, এই মাটিকে ভালোবাসুক- সেটি স্মার্টনেসের সবচেয়ে বড় জায়গা। যার সঙ্গে মা এবং মাতৃভূমির বন্ধন তৈরি হয় তার দ্বারা দুর্নীতি করা সম্ভব নয়। শিক্ষক হিসেবে ক্লাসরুমে এইটুকুন শিক্ষাও যদি দেয়া যায় তাহলেও সেটি কম নয়। একজন মানুষ আধুনিক কৃষক হোক, ডাক্তার হোক, প্রযুক্তিবিদ হোক। কিন্তু একইসঙ্গে তিনি সৎ মানুষ, মানবিক মানুষ হোক। আমি শুধু বলব, আমাদের যে শিক্ষার্থী ক্লাসবিমুখ হয়ে উঠেছে, আমাদের যে অভিভাবকের মধ্যে হতাশা কাজ করছে তাদেরকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে লিংক করে দিতে হবে। আমরা গ্রন্থ রচনা প্রকল্প করেছি। গবেষণা প্রস্তাবনা রেখেছি। এসবে আপনারা যুক্ত হবেন। কলেজে ফিরে গিয়ে ইন-হাউস ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করবেন। এভাবে করে যদি প্রতিটি কলেজে কলেজে এই প্রশিক্ষণের আদলটি গড়ে তুলতে পারি তাহলেই আপনার হাত দিয়ে আমাদের ৩৫ লক্ষ শিক্ষার্থী বিশ্বনাগরিকে পরিণত হবে।

কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) এর আওতায় সিইডিপির ১, ২, ৩ এবং ১৯, ২০, ২১ তম ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থীদের ২৪০ জন এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে