জুড়ীতে টানাবৃষ্টিতে বন্যার অবনতি, দুর্ভোগে বানভাসিরা

প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০২৪, ২১:৪২

জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
ছবি-যায়যায়দিন

গত সপ্তাহ খানেক ভারি বৃষ্টিপাত না হওয়ায় হাকালুকি হাওড়পাড়ের জুড়ী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু গেল দুইদিনের  টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আবারো জুড়ী উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ফলে জুড়ী উপজেলার প্রায় অর্ধলাখের অধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন।আবার বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন বানভাসি মানুষ।

জানা যায়,উপজেলার মানুষ গরু-বাছুর, হাঁস ও মুরগিসহ অন্য প্রাণী নিয়ে দুর্ভোগের সাথে দিনাতিপাত করছেন। বন্যার পানি দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি এখন ভয়াবহতার রূপ ধারণ করছে। উপজেলার প্রায় ৫০ ভাগ মানুষ অসহায় ও দুর্ভোগের সাথে যুদ্ধ করে কোনো রকমে বেঁচে আছেন। এ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু ত্রাণ সহায়তার দরকার তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। 

বন্যার পানি দিন দিন এতই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে অত্রাঞ্চলের বেশিরভাগ বাড়িঘর, রাস্তা ঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থান তলিয়ে গেছে। বন্যায় শত শত ফিশারীর মাছ পানিতে ভেসে গেছে। আর খামারীসহ অন্য মানুষের গরু-বাছুর নিয়ে থাকার ব্যবস্থা দূরহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার প্রায় সব সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরপরেও মানুষজন বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য অধিক টাকা খরচ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্য স্থানে চলাচল করছেন।

সরজেমিনে উপজেলার কয়েকটি গ্রামে দেখা গেছে, হাকালুকির উত্তাল ঢেউয়ে মানুষজন ঘর বাড়িতে থাকতে পারছে না। তারপরো মানুষজন জীবনকে বাজি রেখে মাচার ওপর ঠাঁই নিয়েছে। এছাড়া যারা বাড়িঘরে থাকতে পারছেনা তারা তাদের গরু-বাছুর ও অন্য মালামাল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে অন্যত্র যাচ্ছেন। বন্যা দুর্গতদের আশ্রয়ের জন্য প্রসাশনিকভাবে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার ৮৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বন্যার কারণে ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার দিলীপময় দাশ চৌধুরী।

জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসিকান্ত হাজং বলেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলা প্রশাসনের  ৮০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। নগদ ৮০ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ৮০ হাজার টাকার গো-খাদ্য বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে। ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দকৃত পাঁচ লাখ টাকার বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করে বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ২৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

যাযাদি/ এম