বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১

কলমাকান্দায় ফের পানি বৃদ্ধি, বন্যার আশঙ্কা

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
  ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮:১৩
ছবি-যায়যায়দিন

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় গত তিন দিনের অব্যাহত ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের উব্দাখালী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

উব্দাখালী ছাড়াও উপজেলার গণেশ্বরী, মহাদেও, বাখলা, মঙ্গেলশ্বরী, বৈঠাখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ। আর এতে করে স্থানীয়দের মধ্যে আবারও বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার থেকে অব্যাহত ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে উব্দাখালীসহ সব কটি নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে উব্দাখালী নদীর ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপদসীমা ৬ দশমিক ৫৫ মিটার। উপজেলার কৈলাটি, বড়খাপন, পোগলা, খারনৈ, রংছাতি, কলমাকান্দা সদরের নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেঙে গেছে খারনৈ ইউনিয়নের খাকগড়া চৌরাস্তা এলাকায় সড়ক।

এছাড়া কলমাকান্দা-বরুয়াকোনা, বাহাদুরকান্দা-বাসাউড়া, ঘোষপাড়া-হরিণধরা, কলমাকান্দা-সাঈদপাড়া, মন্তলা-ইসবপুর, গোবিন্দপুর-রানীগাঁও, উদয়পুর-বড়খাপনসহ আরো বেশ কিছু গ্রামীণ সড়কের স্থানে স্থানে পানিতে ডুবে গেছে। খলা, বাসাউড়া, বাহাদুরকান্দা, ডুবিয়ারকোনা, ধীতপুরসহ ২০টি বিদ্যালয়ের মাঠে পানি ঢুকেছে।

খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক বলেন, আমার ইউনিয়নের বাউসাম, লক্ষীপুর, শ্রীপুর, খাগগড়া, বিশ^নাথপুর, সেনপাড়া, রুদ্রনগরসহ কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পানির তীব্র ¯স্রোতে খাকগড়া চৌরাস্তা এলাকার সড়কটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পরে অবশ্য স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ভাঙ্গা অংশে বাঁশের চাটাই দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করা হয়।

এছাড়া বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। কয়েকটি বাড়ির উঠানে ও কয়েকটি বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠেছে। আর এক থেকে দেড় ফুট পানি বাড়লে প্রচুর বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যাবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, গত তিনদিন ধরে উব্দাখালি নদীর পানি অব্যাহত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সকাল ৬ টায় নদীর কলমাকান্দা ডাকাবংলো পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, ঢলের পানিতে উপজেলার কিছু নিম্নাঞ্চল আবারও নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। আমরা সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। জরুরি মুঠোফোন নম্বর খোলা হয়েছে। শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রস্তুত রাখা আছে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন থেকে অব্যাহত ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কলমাকান্দার উব্দাখালীসহ সব কটি নদ-নদীর পানি বেড়ে যায়। ১৮ জুন উব্দাখালী নদীর পানি ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরে অবশ্য ২৬ জুন পানি কমে উব্দাখালী নদীর বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে