মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদীতে পানি ১ থেকে ২ সে.মি. নামা-উঠা করে এখনো বিপদসীমা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) বেলা ১২টায় খবরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুশিয়ারা নদীর শেরপুর সেতু পয়েন্টে পানির বিপদসীমার ৮.৫৫ সে.মি. এসে দাঁড়িয়েছে। এ নদীতে পানির বিপদসীমা ধরা হয়েছে ৮. ৫৫ সে.মি.।
এদিকে নদীতে পানি অল্প করে কমে যাওয়া ও ভারতের ঢলে আবার বেড়ে যাওয়ার দুশ্চিতন্তায় পড়েছেন মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর ও সদর উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষ। তারা আশঙ্কা করছেন, ২০০৪ সালের প্রায় ৮ মাস ব্যাপী দীর্ঘমেয়াদী বন্যা যদি এবারও স্থায়ী হয়, তাহলে মারাত্বক ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা। দীর্ঘমেয়াদী বন্যায় সুরমা-কুশিয়ারা ভরাট হয়ে যাওয়া ও বাঁধ নির্মাণ করে খাল-বিল হাওর-বাওরে পানি প্রবাহিত না হওয়াকে দায়ী করছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে কুশিয়ারায় গেলে দেখা যায়, ঘন-কালো আকাশ থেকে আবারো আঝোরে বৃষ্টি নেমেছে। টানা বৃষ্টিতে খেটে খাওয়া ও মধ্যবৃত্ত মানুষ পলকে পলকে থাকিয়ে রয়েছেন জলমগ্ন উঠান ও দূরের মেঘলা আকাশে। পাশের ওয়াপধা সড়কে কেউ যেতে চাইলে নৌকা কিংবা কলাগাছের ভেলাই তাদের প্রধান বাহন। যাদের বাহন নেই, তারা বাড়ি থেকে কোমরসম পানি ডিঙ্গিয়ে পাঁকা সড়কে গিয়ে উঠছেন। নদী পাড়ে বসবাসকারী জলমগ্ন মানুষের সৌচাগার ও নলকূপ তলিয়ে গেছে। সৌচাগারের কাজ সম্পন্ন করতে তারা খড়কোটো ও বাঁশ দিয়ে জলের উপর ভ্রাম্যমান সৌচাগার বানিয়েছেন।
নদী পাড়ের রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামের শামিম আহমদ বলেন, কেবল ত্রাণ সামগ্রী গ্রহণ করে কিছুদিন খেয়ে চললে আমাদের বন্যার্তদের স্থায়ী সমাধান হবে না। স্থায়ী সমাধানের জন্য ভরাট হয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদী অচিরেই খনন করতে হবে। নদীর দুই পাড়ে বাঁধ নির্মাণ করে তলিয়ে যাওয়া এলাকায় উত্তোলন করা মাটি ফেলে ভরাট করলে ওই এলাকার বন্যাক্রান্তরা মুক্তি পাবে।
স্থানীয় উত্তরভাগ ইউপি সদস্য মাসুক মিয়া ও মো. ওলিউর রহমান বলেন, কুশিয়ারা নদী পাড়ের প্রাণের দাবি নদী খনন করা। আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান’র কাছে নদী খননের দাবি তুলেছি। তিনি আমাদের সাথে ঐক্যমত পোষণ করে নদী খননসহ পাড়ে বসতিতে মাটি ভরাটের আশ্বাস দিয়েছেন।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, কুশিয়ারায় বন্যা থেকে মানুষকে রক্ষা করতে আমরা একটি সমীক্ষা চালাচ্ছি। সমীক্ষার পর নদী খননের পদক্ষেপ নেয়া হবে।
যাযাদি/ এসএম