গৌরীপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে ২০০ শতক জমির ধান ক্ষেতের মাঝেই পঁচে বিনষ্ট

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২৪, ১৩:০২

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

পূর্ব শত্রুতা জেরে ২০০ শতক জমির পাকা ধান মাঠেই পঁচে বিনষ্ট হয়ে গেছে । পাকা ধান কাটতে এক প্রতিপক্ষ ক্ষেতে গেলে অপর প্রতিপক্ষের বাঁধার মুখে মাঠের ধান না কেটেই  চলে আসেন প্রতিপক্ষরা। তারপর নানা দেনদরবার করেও সেই পাকা ধান আর কাটা যায়নি। শেষে  ফসলের মাঠেই ধান পঁচে বিনষ্ট হয়েছে বৃষ্টির পানিতে ডুবে।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের পাঁচাশি গ্রামে।

এ ব্যাপারে গৌরীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ভুক্তভোগী উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (সাময়িক বরখাস্ত) পাঁচাশি গ্রামের আল মামুন রাজিব।

ভুক্তভোগী রাজিবের সাথে কথা বলে জানা যায়, একই গ্রামের মো. সিদ্দিক খা গংদের সাথে তাদের প্রায় ১৫ বছর যাবত পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। দুই পরিবারের এ দ্বন্দ্ব এখন দুই গোত্রের মাঝে ছড়িয়ে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘস্থায়ী শত্রুতার। যার প্রেক্ষিতে গতবছর তাঁর চাচাতো ভাই সাজ্জাদুল হক খুন হয়েছেন প্রতিপক্ষের হাতে।  উল্লেখিত দীর্ঘ সময় ধরে দুই পক্ষের মাঝে চলছে জমি দখল, হামলা, মামলা ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা।

গত বোরো মৌসুমে ২০০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছিলেন রাজিব। পাকা ধান  কাটতে তিনি জমিতে গেলে তাদের ওপর দেশিয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা করে সিদ্দিক খার লোকজন। অনেক দেন-দরবার করেও সেই ধান আর কাটা সম্ভব হয়নি। ফলে ২০০ শতক জমির সম্পূর্ণ ধান মাঠেই বিনষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

পাঁচাশি গ্রামের বাসিন্দা মো. আবুল কালাম ওরফে কালা মিয়া (৬৫) বলেন- দীর্ঘদিন যাবত জমিগুলো অনাবাদি হয়ে আছে। এবার বোরো ধান লাগানোর পর সিদ্দিক খা পাকা ধান কাটতে দেয়নি, সেই ধান মাঠেই বিনষ্ট হয়ে গেছে।

রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল আমিন জনি বলেন- দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। আমরা চেষ্টা করেছিলাম যাতে ফসলের জমিটা পতিত না থাকে। কিন্তু সিদ্দিক গংরা কোন কিছুই মানতে রাজি নয়, তাদের কারণে ২০০ শতক জমির ধান মাঠেই বিনষ্ট হয়ে গেছে এবার।

অভিযোগ অস্বীকার করে সিদ্দিক খা বলেন- দীর্ঘদিন প্রেম করে ২০০৯ সালে আমার মেয়েকে বিয়ে করেছিল রাজিব। মাত্র দুই মাস পর মেয়েকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছে। সে আমার মেয়ের সাথে প্রতারণা করে, জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে। ডিভোর্সের পর মেয়ের নামে ৮০ শতক জমি লিখে দেয়ার কথা থাকলেও, আজও তা দেয়নি। আমরা তার জমির ধান কাটতে বাধা দেইনি, আমাদের জমির উপর দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে  নিষেধ করেছি।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় ( পিপিএম) বলেন, দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের, সিদ্দিক খা উনার জমির উপর দিয়ে যেতে রাজিবদের নিষেধ করেছেন। বিকল্প অন্য কোন পথ না থাকায় তাঁরা ধান কাটতে পারেনি। পরে  বৃষ্টির পানিতে ডুবে ক্ষেতের মাঝেই ধান পঁচে বিনষ্ট হয়ে গেছে।

যাযাদি/ এসএম