মৌলভীবাজারে মাগুরছড়া দিবস পালন করেছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। শুক্রবার দুপুরে জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়ায় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় এই মানববন্ধন কর্মসূচি।
মৌলভীবাজার জেলা পাহাড় রক্ষা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী’র সভাপতিত্বে ও সেলিম আহমদ চৌধুরী’র সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্য দেন মাগুরছড়া খাসিয়া পান পুঞ্জি’র প্রধান (মন্ত্রী) ডিডি ইউ চং, এড. সানোয়ার হোসেন, আহমদ সিরাজ, শাহরিয়ার ইসলাম রুহিন, জুয়েল আহমদ, সাবরিনা রহমান,পিন্টু দেবনাথ প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ভান্ডারখ্যাত মাগুরছড়া'র ২৭ বছর পূর্ণ হলেও এখনো অক্সিডেন্টাল-কোম্পানী শেভরনের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৪ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে পারেনি সরকার। প্রায় ৩ যুগ অতিবাহিত হবার পরও ক্ষতিপূরণ আদায় করতে না পারায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। “১৯৯৭ সালের ১৪ জুন মাগুরছড়ায় দায়িত্বহীনতার কারণে যে ব্লো-আউট ঘটেছে এবং গ্যাস সম্পদ, পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। মার্কিন কোম্পানী অক্সিডেন্টাল-ইউনোকল-শেভরন এখনো ক্ষয়ক্ষতি হিসেবে কোন অর্থ দিতে আসছে না । সরকার আর প্রশাসন তো এর দায়-দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। বিদেশী একটি কোম্পানী আমাদের দেশের গ্যাস সম্পদ, পরিবেশ ধ্বংস করলো, শুধু তাদের অবহেলা-আর ত্রুটির কারণে।
বক্তারা আরো বলেন, ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আমাদের একটাই কথা তা হলো, আমাদের দেশের তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদের এভাবে ধ্বংসযজ্ঞ ও লুণ্ঠন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন দিবাগত রাতে মাগুরছড়া ১নং অনুসন্ধান কূপে খনন চলাকালে বিস্ফোরণ ঘটে। মাগুরছড়া গ্যাসকূপ বিস্ফোরণের পরপরই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহফুজুল ইসলামকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি এক মাসের মধ্যে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে ১৯৯৭ সালের ৩০ জুলাই মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিবের কাছে দু’টি ভলিউমে প্রায় ৫০০ পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্টটি জমা দেয়। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এ বিস্ফোরণের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, ক্ষতিপূরণ পাওয়া ও বিতরণের বিষয়ে ৩ সদস্যের একটি সাব কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি সাব-কমিটিকে জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে অক্সিডেন্টালের ব্যর্থতার জন্যই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। কমিটির তদন্তে অক্সিডেন্টালের কাজে ১৫/১৬টি ত্রুটি ধরা পড়ে।
যাযাদি/ এসএম