অভাবের সংসারে ৩ যমজ শিশুর ভাগ্যে জুটছে না দুধ, জামাকাপড় ও দুধ কিনে দিলেন ইউএনও

প্রকাশ | ১৩ জুন ২০২৪, ১৯:৪১

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
ছবি-যায়যায়দিন

অভাবের সংসারে ৩ যমজ শিশু জন্ম, এমন খবরে গরিব পরিবারটিতে সবার মুখেই ছিল হাসিখুশি। তবে বাবা-মায়ের সেই অভাবের সংসারে তিন শিশুর ভাগ্যে এখন জুটছে না দুধও। শেষমেশ উপায় না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আসেন বাচ্চাদের দুধ খাওয়ানোর সহযোগিতার জন্য। তাৎক্ষণিক ইউএনও বাচ্চাগুলোকে ৫ হাজার টাকার দুধ ও নগদ টাকাসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী দেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে  উপজেলা নির্বাহী অফিসাররের কার্যালয়ে তিন যমজ সন্তানদের মায়ের কাছে বাচ্চাদের দুধসহ খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়।

বরগুনার জেলার তালতলীর বড়বগী ইউনিয়নের সওদাগার পাড়া এলাকার প্রিয়া আক্তার ও সলেমানের ঘরে জন্মেছে তিন যমজ সন্তান নবী হোসেন,ইমাম হোসেন ও সাইফা তুন জান্নাত। তাদের বয়স এখন আড়াই মাস। সলেমান একজন আটো-ড্রাইভার। 

টাকার অভাবে বাচ্চাদের দুধ কিনেও খাওয়াতে পারছিলো না তারা। পরে তিন সন্তান নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আসেন মা প্রিয়া আক্তার। তাদের চাহিদাই ছিলো বাচ্চার খাবার (দুধ)। তিন সন্তানদের দুধ না খাওয়ানোর কথা শুনেই মানবিক ইউএনও দুধসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করে দেন।

তিন যমজ শিশুর মা প্রিয়া আক্তার বলেন, আমরা খুবই গরীব। শিশুর বাব অটো ড্রাইভার। তার রোজগারে কোনোমতে চলে অভাবের সংসার। গত আড়াই মাস আগে একসঙ্গে দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। বাড়িতে নতুন অতিথি আসায় খুব খুশি ছিলাম। 

কিন্তু তারা বুকের দুধ যা পায় তাতে মোটেও হয় না। টাকার অভাবে কিনেও খাওয়াতে পারছি না। জন্মের পর থেকেই ধারদেনা করে বাচ্চাদের দুধ কিনে খাওয়াচ্ছি। এ জন্য বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে যাই কিছু সহযোগিতা চাইতে। 

তিনি আমাদের পরিবারের কথা শুনে তাৎক্ষণিক বাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় ৭ টি দুধের প্যাকেট, তিন সন্তানের জামা-কাপড়, ফিটার, নিপেল, ৩০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল,১ কেজি তেল,১ কেজি চিনি ও লবন,হলুদ ও মরিজ দেয়। সাথে নগদ ২ হাজার ৫ টাকা দিয়েছে। পরে আরও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা এতোটা আশাকরিনি যা পেয়েছি। এখন আমার সন্তানদের তিন চার মাস চলে যাবে এই দুধে।

উপজেলি নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, আমি ঐ যমজ শিশুর পরিবারের কথা শুনে খুই খারাপ লেগেছে। অভাবের কারণে বাচ্চাদের দুধ ক্রয় করে খাওয়াতে পারে না। আমি তাৎক্ষণিক দুধ,জামা-কাপড়সহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী দেই তাদের। কিছু দিন পরে সমাজ সেবা থেকে আরও ৯ হাজার টাকার চেক দেওয়া হবে।

যাযাদি/ এম