চরফ্যাশনে ভেটকি মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী মৎস্য চাষিরা
প্রকাশ | ১২ জুন ২০২৪, ১১:৩৫
মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প খুঁজলে অনেক পাওয়া যাবে। তবে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ভেটকি মাছ চাষ করে মৎস্য চাষিরা স্বাবলম্বী হওয়ার গল্পটা এখন রোল মডেল। এখানকার ভেটকি মাছ চাষের পদ্ধতি দেখতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ভিড় করছেন অসংখ্য মৎস্য চাষিরা।
ভেটকি মাছ কোন কোন অঞ্চলে কোরাল মাছ নামে পরিচিত। ছোট কিংবা বড়-আকৃতির যেমনই হোক না কেন এই মাছ পুষ্টি, স্বাদ ও উচ্চমূল্যের কারণে মাছ চাষিদের কাছে আকর্ষণীয়।
উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, কুকরি মুকরি, চর মানিকা, জাহানপুর, শশীভূষণ, নজরুল নগর, জিন্নাগড় ও হাজারিগঞ্জ ইউনিয়নে প্রায় ১২০ একর পুকুরে ভেটকি মাছ চাষ করছেন অসংখ্য মৎস্য চাষিরা। এখানে বাণিজ্যিকভাবে ভেটকি মাছ চাষ করে একদিকে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন চাষিরা, অন্যদিকে মাছ উৎপাদন, আহরণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ কাজে অসংখ্য বেকার যুবকের সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের।
জানা যায়, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সমন্বিত কৃষি ইউনিট (মৎস্য খাত) এর অর্থায়নে ও কারিগরি সহায়তায়, পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এর নিবিড় সেবা বাস্তবায়নে উপজেলার মাছ চাষীদের এমন পরিবর্তন ঘটেছে।
মৎস্য চাষি হারুন মিজি, মো. সজীব, মেহেদী হাসান ও মো. মঞ্জু বলেন, এতদিন আমরা সনাতন পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতাম। লোকসান গুনতে হতো প্রতি বছর। আধুনিক মাছ চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে আমাদের জানা ছিল না। পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) আমাদেরকে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত ভেটকি মাছ চাষের উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বর্তমানে তাদের কারিগরি সহায়তা, পরামর্শকেন্দ্র, বিলবোর্ড ও প্রচার প্রচারণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভেটকি মাছ চাষে ঝুকছে প্রান্তিক মৎস্য চাষীরা। তাঁরা বলেন, স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে আমরা এখন ভেটকি মাছ ঢাকা-বরিশালসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির জন্য পাঠিয়ে থাকি। এতে খরচ পুষিয়ে বছরে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা লাভ হয়ে থাকে আমাদের।
পরিবার উন্নয়ন সংস্থার মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদী আজম বলেন, আমরা মৎস্য চাষীদেরকে তাদের গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে বের করে উন্নত ও আধুনিক মৎস্য চাষ পদ্ধতির মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করছি। ভেটকি মাছ সহজে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। বেশি ঘনত্বেও চাষ করা যায়। দেশে-বিদেশে চাহিদাও প্রচুর। তাই মৎস্য চাষীদেরকে আধুনিক ভেটকি মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। ইতোমধ্যে অনেক চাষী সফলও হয়েছেন।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলেন, এই উপজেলায় যে হারে ভেটকি মাছ চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এতে নিশ্চিত বেকারত্ব নিরসন ও অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনার দার উন্মোচন হবে। মৎস্য অধিদপ্তর থেকে চাষীদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও জানায় মৎস্য কর্মকর্তা।
যাযাদি/ এসএম