নওগাঁর আত্রাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এবাদুর রহমানের ভাই-ভাতিজা ও কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগ ওঠেছে। ওই হামলায় উভয় পক্ষের অন্তত: ৯জন আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় রাতেই থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ বেগমের ছেলেসহ ৮জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ উপজেলার জয়সাড়া আব্বাসের মোড় নামক স্থানে।
আত্রাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী এবাদুর রহমান প্রামানিকের (কৈ প্রতিক) মেয়ে রোকসানা আফরোজ বলেন,শুক্রবার রাতে ভোটের প্রচার প্রচারনা শেষে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কর্মী-সমর্থকরা বাড়ী ফিরছিলেন। এসময় উপজেলার জয়সাড়া আব্বাসের মোড়ে পৌছলে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ বেগমের (কাপ-পিরিচ প্রতিক) ছেলে রাব্বীর নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে লোহার রড,হকিস্টিক দিয়ে বেধরক মারপিট করতে থাকে। এসময় জয়সাড়া গ্রামের লোকজন ছুটে আসলে তারা হামলার শিকার হন এবং হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
হামলায় প্রার্থী এবাদ প্রামানিকের ভাই শহিদুল ইসলাম,ভাতিজা মনিরুজ্জামান (রনি),কর্মী জিহাদ হোসেন,শাহাদাত হোসেন ও উজ্জল হোসেন আহত হয়। আহতদের স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে আত্রাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে রনির অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রার্থীর মুখপাত্র মোঃ শহিদুল ইসলাম বাবু জানান,এবাদ চেয়ারম্যান দীর্ঘ একটানা তিন তিনবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষানিত্ব হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মমতাজ বেগমের লোকজন এই হামলা চালিয়েছে। এঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন রোকসানা আফরোজ।
এদিকে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদে এবং সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আত্রাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী এবাদুর রহমান। উপজেলার সাহেবগঞ্জ নির্বাচনী প্রচার অফিসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আত্রাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবু,উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম,উপজেলা কৃষকলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আল মুক্তার,উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দীনসহ দলীয় ও কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ বেগম জানান,প্রার্থী এবাদের লোকজন টাকা নিয়ে গেছে এমন খবরে তার লোকজন জয়সাড়া য়ায়। সেখানে তার কর্মীকে এবাদের ভাতিজা রনি মারপিট করে। এরপর রনিকেও কয়েকটা বারি দিয়েছে। এঘটনার জের ধরে তার ছেলে রাব্বী এবং সমর্থকদের মারপিট করে এবং একটি মোটরসাইকেল ভেঙ্গেছে। এতে তার পক্ষের আহাদ,আপু ও আশিক আহত হয়।
আহতদের আত্রাই হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানে রাতে দেখতে গেলে ছেলের বউ কামনা বিবিকে প্রার্থী মারপিট করেছেন এবং নানা অশ্লীল কথা বলেছেন। এছাড়া হাসপাতাল গেটে তিনি নিজেও হামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন মমতাজ বেগম। তবে তার পক্ষের লোকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি বলে জানিয়েছেন মমতাজ বেগম।
থানাপুলিশ জানায়,হামলার ঘটনায় রাতেই প্রার্থী এবাদুর রহমানের ভাই সাজেদুর রহমান বাদী হয়ে ১৭জনের নাম উল্লেখসহ আরো৫/৬জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় প্রার্থী মমতাজ বেগমের ছেলে শফিকুজ্জামান রাব্বীসহ উপজেলার গুড়নই গ্রামের তহিদুল ওরফে ইমান আলী ও হাফিজ উদ্দীন,সাহেবগঞ্জ মোল্লাপাড়ার আশিক রহমান,জগদাস গ্রামের আশরাফুল ইসলাম ও শহিদুল সরদার,চকবিষ্টপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও মোজাফ্ফর হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আত্রাই থানার(ওসি) মোঃ জহুরুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃতদের শনিবার আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। এছাড়া মমতাজ বেগমের এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি জানিয়ে তিনি বলেন,অভিযোগ পেলে অবশ্যই ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
যাযাদি/ এম