ঢাকা-পদ্মা সেতু-কাশিয়ানী-যশোর রুটে চলবে ট্রেন

পাল্টে যাবে গোপালগঞ্জ-নড়াইল-খুলনার মানুষের জীবনমান  

প্রকাশ | ১৩ মে ২০২৪, ১১:০৩

মোঃ নিজামুল আলম, কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি:
ছবি-যায়যায়দিন

ঢাকা-পদ্মা সেতু-কাশিয়ানী-যশোর [রুপদিয়া] পর্যন্ত রেল লাইনের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পরীক্ষামূলক চলাচল শেষ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রাণের রেল লাইন এটি। রেল চলাচল শুরু হলে পাল্টে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান।
 
গোপালগঞ্জ, নড়াইল, খুলনা, যশোর, বেনাপোলসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের অনেক বছরের স্বপ্ন পূরন হতে চলেছে। দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রাণের স্পন্দন এই রেল লাইন। আর সেই রেল লাইনে যে কোনো সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চলাচল শুরু করবে রেলগাড়ী। দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ অধীর আগ্রহে বসে আছে কবে কখন তাদের স্বপ্নের রেল লাইনে কাঙ্খিত রেলগাড়ী চলাচল শুরু করবে। ইতিমধ্যেই ৩০ ও ৩১ মার্চ নব-নির্মিত ৮৪ কিলোমিটার রেল লাইনে পরিক্ষামূলকভাবে রেলগাড়ী চলাচল করেছে।
 


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি পূরনের আরও এক ধাপ এই রেল লাইন উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাবে। তাইতো এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। রেল চালু হলে বদলে যাবে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন মানের যাত্রা। কৃষকের উৎপাদিত পণ্য রেলযোগে দ্রুত ও কম খরচে পৌঁছে যাবে রাজধানী ঢাকায়। এ অঞ্চলের মানুষ খুলনা থেকে মাত্র তিন ঘন্টা এবং যশোর থেকে মাত্র আড়াই ঘন্টায় পৌঁছে যাবে রাজধানীতে। কমে যাবে ঢাকা-খুলনা- যশোহরের দুরত্ব-২৩০ কিলোমিটার প্রায় । মাত্র কয়েক দিন আগেও পশ্চিম-দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য এটি ছিলো স্বপ্ন।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য আজ সেটি এই অঞ্চলের মানুষের কাছে বাস্তব।


পদ্মা সেতু সংযোগ প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে ফরিদপুরের ভাংগা থেকে কাশিয়ানী-নড়াইল হয়ে যশোরের সিঙ্গিয়া জংশন পযর্ন্ত ১৬২ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফরিদপুরের ভাংগা থেকে যশোরের রুপদিয়া পর্যন্ত ৮৪ কিলো মিটার রেল স্থাপনে ব্যয় ধরা হয় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ (সি আর সি)এই রেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। সেই সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকল্পের পরার্মশক হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেছে। 

প্রকৌশলী আবু ইউসুপ মো. শামীম বলেন, প্রকল্পের সামগ্রিক কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী জুন মাসের যে কোনো সময়েই রেল লাইনের উদ্ধোধন করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাথে গোপালগঞ্জ, নড়াইল, খুলনা ও যশোর, বেনাপোলসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ বছরের স্বপ্ন পূরন হবে। মাত্র কয়েকটা দিন অপেক্ষা মাত্র । প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে উম্মোচিত হবে এই স্বপ্নের রেল লাইনে চলাচলের দ্বার।

অবসর প্রাপ্ত অধ্যাপক প্রবীর কুমার চক্রবর্তী  বলেন, রেল চালু হলে আমাদের সময় ও অর্থ বেচেঁ যাবে। ব্যবসায়ী মুনশী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, রেলের কাজ শেষ হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। 

ব্যবসায়ী হিরো মৃধা ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কষ্টের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা- কাশিয়ানী- গোপালগঞ্জ, ঢাকা-কাশিয়ানী-খুলনা, ঢাকা-কাশিয়ানী-যশোর -বেনাপোল বর্ডার পর্যন্ত রেল লাইন  নির্মাণ করে দিয়েছেন।  এজন্য তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

শুধু তাই নয়, এই রেল লাইন উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে রেল যোগে ঢাকা থেকে বেনাপোল, ঢাকা থেকে গোপলগঞ্জ,খুলনা ও যশোর যাতায়াত সহজ হবে। সেই সাথে বেনাপোল স্থল বন্দরের সাথে ঢাকার দূরত্ব কমে আসবে। বেনাপোল স্থল বন্দর থেকে আমদানী-রফতানী পন্য সরাসরি পদ্মা সেতু হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহনে সুবিধা পাবেন ব্যবসায়ীরা। যাত্রীসাধারনও কোনো ভোগান্তি ছাড়া যাতায়াত করতে পারবেন। 

পদ্মা সেতু দিয়ে রাজধানীতে স্বল্প সময়ের মধ্যে যেতে পারবেন পশ্চিম-দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ। মাত্র কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে যাতায়াতকারীদের।

এই রেল লাইন উদ্বোধনের পর থেকে ধীরে ধীরে পাল্টে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান, আর সেই সাথে বেনাপোল-ঢাকা মহাসড়ক পথে অল্প খরচে পণ্য পরিবহনে সুযোগ পাবে আমদানী-রফতানী কারকরা।

যাযাদি/ এস