বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১

বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষা এ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন ডা. সোহরাব আলী

শফিউল আলম লাভলু, নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
  ১১ মে ২০২৪, ১৪:৪৫
ছবি-যায়যায়দিন

বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা এ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেলেন শেরপুরের নকলার কৃতি সন্তান ঢাকার বিএসএমএমইউ এর বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাক্তার মো: সোহরাব আলী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য ও পরবিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-১ শাখা।

অধ্যাপক ডাক্তার সোরহাব আলী ১৯৪৪ সালের ১৬ জুন শেরপুরের নকলা উপজেলার পাঠাকাটা ইউনিয়নের চকপাঠাকাটা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তিনি বাবা-মা'র একমাত্র সন্তান। বাবা মরহুম আহাম্মদ আলী ও মা মরহুমা সহিতুন নেছা ছিলেন রত্নগর্ভা গৃহীনি। পারিবারিক জীবনে অতী সাধারণ জীবন যাপন করতেন। তিনি ছোট বেলা থেকেই অত্যান্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। পারিবারিক জীবনে ডাক্তার সোরহাব আলী ৩ কন্যার সন্তানের জনক। কন্যারা হলেন সাকেরা মহসেনা সুমা (কানাডা সিটিজেন), ডক্টর ইলারা রোকসানা সাউন ও সাবেরা সুলতানা সাথী (আমেরিকার সিটিজেন)। সবাই উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করেছে এবং তারা সবাই প্রবাসী।

প্রফেসর ডাক্তার সোহরাব আলী'র নিজ গ্রামের মক্তব ঘরে প্রাথমিক শিক্ষার হাতে খড়ি। নারায়ণখোলা জুনিয়র মাদ্রাসায় ২য় শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৬০ সালে তৎকালীন সময়ের নামকরা পিয়ারপুর হাইস্কুল থেকে তিনি গণিতে লেটার ১ম বিভাগে মেট্রিকুলেশন (এসএসসি) পরীক্ষা পাশ করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি (এইচএসসি) পরীক্ষা পাশ করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। ১৯৬৯ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারী পেশায় তার প্রথম কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে আইপিজিএমআর (পিজি) থেকে বায়োক্যামিস্ট্রিতে এম.ফিল(স্নাতকোত্তর) ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৭৭-৭৮ সালে বিএমএ এর সভাপতি ছিলেন। ১৯৭৯-১৯৮০ সালে ডব্লিউএইচ ও ফেলোশিপ ইন ইন্ডিয়া, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, বারমা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া অন ক্লিনিক্যাল বায়োক্যামিস্ট্রি, মেডিকেল এডুকেশন এন্ড নিউট্রিশন এর উপরে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

১৯৮৪ ব্রিটিশ কাউন্সিল বার্সারী ইন রয়েল ইনফার্মারী, গ্লাসগো ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাজ্য অন প্যাথলজিক্যাল বায়োক্যামিস্ট্রি ও ১৯৯৫-৯৯ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্টগ্রাজুয়েট চিকিৎসা অনুষদের ডীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স এন্ড সার্জনস ( বিসিপিএস) থেকে এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৭ সালে সিয়েম কনফারেন্স স্পনসারড বাই ডব্লিউএইচও ইন পাতায়া সেন্টার, থাইল্যান্ড অন টিচিং ম্যাথডোলজি। ১৯৯৭ সালে ক্লিনিক্যাল বায়োক্যামিস্ট্রি কনফারেন্স, কলকাতা,ইন্ডিয়া অন কনসেপ্ট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন, ১৯৯৮ সালে ল্যাবরেটরি ইকুয়ুপমেন্ট অপারেশনাল ট্রেনিং স্পনসারড বাই টেকনিকন সিঙ্গাপুর অন অটো এনালাইজার টেকনিক, ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে এক্সটারনাল এক্সামিনার ইন ক্যামিক্যাল প্যাথলজি ফর এফসিপিএস এক্সামিনেশন, পাকিস্তান কলেজ অব ফিজিসিয়ান্স এন্ড সার্জনস এট করাচি এন্ড লাহোরেও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯-২০০৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োক্যামিস্ট্রি বিভাগে অধ্যাপনা ও পরবর্তীতে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৫ সালে জুন মাসে অবসর গ্রহন করেন ডাক্তার সোরহাব আলী। বিশ্বের ৯৫ টি দেশে তিনি হাতে কলমে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোররাতে শাহাবাগের পাশে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে খন্ডযুদ্ধে অংশ নিয়ে বিজয়ী বেশে তখনকার রেডিও পাকিস্তান ভবনের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে আসেন ডাক্তার সোহরাব আলী।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে