সারা দেশের ন্যায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে মঙ্গলবার মধ্যরাত। ফলে দুই মাস পর বুধবার (১লা মে) জাল-নৌকা নিয়ে মাছ শিকারে নেমেছেন এখানকার জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা সফল হয়েছে দাবি করে এবার রেকর্ড পরিমাণ ইলিশ উৎপাদনের আশা করছে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার।
দুই মাস পর মাছ ধরা শুরু হওয়ায় চরফ্যাশনের মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর জেলেরা নতুন উদ্যমে প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ উপলক্ষ্যে মৎস্য ঘাট ও জেলে পল্লীতে রীতিমতো উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। আড়ৎগুলোতেও ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলছেন, এ বছর অভিযান সফল হওয়ায় ইলিশের উৎপাদন বাড়বে।
তিনি বলেন, আমাদের টাস্কফোর্সের কঠোর অবস্থান থাকায় জেলেরা নদীতে নেমেছে কম। তারপরেও যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নেমেছে তার মধ্যে প্রায় ২৪০ জন জেলেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়েছি।
মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান দুই মাসের জাটকা রক্ষার অভিযান সম্পর্কে জানান, এ বছর ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় চরফ্যাশনের অভয়াশ্রম এলাকায় ৭৫টি অভিযান ও ৩৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। দুই মাসে প্রায় ০.৯৭৬ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ, ১.৯০২ লাখ মিটার নিষিদ্ধ জাল, ১৯ টি মাছ ধরার নৌকা জব্দ করা হয়েছে। আটক জেলেদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে এক লাখ টাকা।
সামরাজ মৎস্য ঘাটের কামাল মাঝি জানান, এই বছরের অভিযানে প্রশাসন খুবই কঠোর অবস্থানে ছিলো এবং অসাধু জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে সাহস পায়নি; এইজন্যই অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর ইলিশের উৎপাদন বেশি হবে আশা করছি। উপজেলা আওয়ামী মৎস্যলীগের সভাপতি শফিউল্লাহ পলোয়ান বলেন, এবার অভয়াশ্রমে অত্যন্ত সফল অভিযান পরিচালনা করেছে মৎস্য অধিদপ্তর।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার দেব জানান, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে এবার অভিযান অনেক ভালো হয়েছে। নদীতে প্রচুর জাটকা বিচরণ করতে আমরা দেখেছি। যা সাগরে ফিরে যাচ্ছে। পরবর্তী সময়ে প্রজননের উদ্দেশ্যে আবার নদীতে ফিরে আসবে। আশা করি এ বছর ইলিশ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত থাকবে।
যাযাদি/ এস