চুয়াডাঙ্গা জেলা তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অস্থির হয়ে উঠেছে। দু’দিন পর আবারও এ জেলায় তাপমাত্রার তীব্রতা বেড়ে গেছে। দু’দিনে এ জেলায় ২ থেকে ৩ ডিগ্রী তাপমাত্রা বেড়েছে।
আজ শুক্রবার ( ২৬) এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্র থেকে এ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১১ শতাংশ। তীব্র রোদ আর রোদে আগুনের ফুলকির মতো তেজ যেন মরুভুমির তাপমাত্রা। অতি তাপদাহে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে মানুষ ও প্রানীকুল।
তীব্র রোদের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালকরা কাজ করতে না পেরে অনাহারে দিন পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ড পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োাজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। তওেব রোদের এতো উত্তাপ যে মাথা ঘুরে যাচ্ছে। হিট স্ট্রকে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এদিকে অতি তীব্র তাপদাহে রবিবার থেকে স্কুল খোলার সিন্ধ্রান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এ জেলার অভিভাবকরা। যেখানে জাতী সংঘের শিশূ তহবিল ইউনিসেফ চলতি তাপপ্রবাহে বাংলাদেশের শিশুদের অতি উচ্চ ঝুকির মধ্যে রেখেছে। সেখানে স্কুলগুলো চলমান তাপপ্রাহ পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য সরকারের অনুরোধ জানিয়েছে এ জেলার অভিভাবকরা।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৯ শতাংশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ ও দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৬ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৪ শতাংশ।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৪ শতাংশ, এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২১ শতাংশ ও দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৩ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩২ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৩ শতাংশ। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস,এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৯ শতাংশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৮ শতাংশ ও দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৫ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩২ দশমিক ৮ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৭ শতাংশ। সোমবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রী রেকর্ড করা হয়, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৯ শতাংশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৬ শতাংশ ও দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় সর্বোচ্চ ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৫ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩১ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭১ শতাংশ। রবিবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস,এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৯ শতাংশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস,ওই সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ ও বেলা ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২০ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৬৮ শতাংশ। তিনি আরো জানান,আর্দ্রতা বেশী অর্থাৎ বাতাসে জলীয় বাস্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় জন্য গরমে অস্বস্তি বেশী লাগছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩২ শতাশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ ও দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৮ শতাংশ। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রী,বাতাসের আদ্রতা ছিল ৩৪ শতাংশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। সকাল ৯টা তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৫ শতাংশ এবং দুপুর ১২ টায় রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৯ শতাংশ। বর্তমানে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস,ওই সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪২ শতাংশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৫ শতাংশ এবং দুপুর ১২টায় রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৫ শতাংশ।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৭ শতাংশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২২ শতাংশ এবং দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস, সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩১ শতাংশ। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৭ শতাংশ। এদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৭ শতাংশ এবং ওই দিন বেলা ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস, সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৩ শতাংশ। বাতাসে জলীয় বাস্পের পরিমান বেশী থাকায় বেশ গরম অনুভূত হচ্ছে।
যাযাদি/ এসএম