দৌলতখানে কলেজ শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৩
প্রকাশ | ১২ মার্চ ২০২৪, ১৭:২৭
ভোলার দৌলতখান উপজেলায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে আসিফ (১৮) নামের এক কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরো পাঁচজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। নিহত আসিফ উপজেলার চর খলিফা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. বাবুলের ছেলে।
আহতরা হলেন- দুলাল, রাসেল, বাবু, আমজাদ ও মিরাজ। এদের প্রত্যেকের বাড়ি চর খলিফা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে।
সোমবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই ইউনিয়নের কদমতলা এলাকার নুরু মিয়ার দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আজ মঙ্গলবার আসিফের বাবা মো: বাবুল বাদী হয়ে ৭ জনকে চিহ্নিত ও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামী কবির (২৭) তার বাবা ছালেম (৬০) ও মা মোসা: ফিরোজা বেগমকে (৫০) আটক করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আহত রাসেল ও তার বন্ধু নিহাদকে নিয়ে সন্ধ্যার দিকে ঝালমুড়ি খেতে বাড়ির পাশের নুরে আলমের দোকানে যায়। সেখানে সুবর্ণা (১৬) নামে একটি মেয়ে দাড়ানো ছিল। তখন রাসেল তার বন্ধু নিহাদকে বলেন, ‘বন্ধু কালকে থেকে রোজা গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে দেখা করতে পারবি না। দেখা করতে তো টাকা খরচ হবে, সেই টাকা দিয়ে ঝালমুড়ি খাওয়া’।
এই কথা শুনে সেখানে থাকা মেয়েটি ছেলেগুলো অসভ্য বলে বাড়ি চলে যায়। বাড়ি গিয়ে সুবর্ণা তার ভাই ফাহাদকে বিষয়টি জানালে, ফাহাদ এসে সেখানে থাকা রাসেল ও নিহাদসহ পাঁচজনকে স্থানীয় জাইল্লা বাড়ির দরজায় পেয়ে তাড়া করলে, তারা দৌড়ে সুপারি বাগানে প্রবেশ করে। পরে সুপারি বাগানের ভেতরে গিয়ে ফাহাদ এসএস পাইপ দিয়ে রাসেলের পায়ে আঘাত করে।
পরবর্তীতে ফাহাদ তার ভাই কবিরসহ তার বন্ধু শামিমসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে খবর দিলে তারা রামদা এবং লাঠিসোটা নিয়ে আসে। একপর্যায়ে আসিফসহ সেখানে থাকা আরো চারজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
পরে স্থানীয়রা আসিফসহ আহতদেরকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আসিফকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিক্যালে পাঠায়। তবে এঘটনায় এর পর থেকেই ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ ফেব্রুয়ারি দৌলতখান উপজেলার পৌর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে ভাইকে রক্ষা করতে গেলে লোহার রডের আঘাতে খুন হয় মো. রব্বি (২২) নামের এক কলেজশিক্ষার্থী। এর রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও হত্যার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তবে এলাকাবাসী ও জনমতে প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন। তারা মনে করছে প্রশাসনের দুর্বলতার কারনে একের পর এক হত্যাকান্ডের মত ঘটনা ঘটছে। দৌলতখানের মতো শান্তিপ্রিয় এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বেড়েই চলছে।
ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন আসাদুজ্জামান জানান, এঘটনায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলার পর তিনজকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ চলমান রয়েছে।
যাযাদি/ এম