বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জে পারিবারিক কলহে স্বামী-স্ত্রীর আত্মহত্যা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
  ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:২৫
নারায়ণগঞ্জে পারিবারিক কলহে স্বামী-স্ত্রীর আত্মহত্যা

নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলায় পারিবারিক কলহের জের ধরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে স্বামী-স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। প্রেম করে বিয়ে করার পরও স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় কলহ তৈরির পর তারা দুইজন আত্মহত্যা করে।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৯টায় বন্দর থানার র‌্যালী আবাসিক এলাকার হুমায়ুন আজাদ মিয়ার ৫ তলা ভবনের ৪ তলা ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে।

পারিবারিক কলহের জের ধরে আত্মহত্যার এ ঘটনাটি ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।

নিহতরা হলো পুরান বন্দর চৌধুরী বাড়ি এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে সৌদি ফেরত কাওসার (৩২) ও তাঁর স্ত্রী শরীয়তপুর জেলার চর আন্দির চর চান্দের বাজার এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে ঝর্ণা আক্তার (১৮)। নিহত ঝর্ণা তার ভাই রায়হানের ভাড়া বাসায় বন্দরের র‌্যালী আবাসিক এলাকার হুমায়ুন আজাদ মিয়ার বাড়িতে থেকেই বন্দর গার্লস স্কুলে ৯ শ্রেণিতে লেখা পড়া করতো।

নিহত ঝর্ণার স্বজন সহ এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কাওসারের পূর্বে আরও একজন স্ত্রী রয়েছে। সেই সংসারে ৮ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি সে বিদেশে থাকা অবস্থায় ঝর্ণার সাথে ফেইসবুকে পরিচয় ঘটে। তখন থেকেই তাদের মধ্যে প্রেম ভালোবাসা সম্পর্ক তৈরি হয়। কাওসার নিজেকে অবিবাহিত হিসেবে মেয়ের কাছে উপস্থাপন করেন। দেশে আসার পর উভয়ের মধ্যে একাধিকবার দেখা সাক্ষাৎ হয়। বিষয়টি কাওসারের প্রথম স্ত্রীসহ ঝর্ণার পরিবারের মাঝে জানাজানি হলে উভয় পরিবার তাদের সম্পর্ক আপত্তি করে।

এ নিয়ে কাওসারের প্রথম স্ত্রী মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় বেশ কিছু দিন জেল খাটে কাওসার। জেল থেকে বের হয়েও সকল বাধা উপেক্ষা করে কাওসার আবেগেরবশীভূত হয়ে ঝর্ণার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ধরে রাখে। এক পর্যায়ে তারা অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়।

এ ঘটনায় ঝর্ণার পরিবারের পক্ষ থেকে কাওসারের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় কাওসার প্রায় ১৪ দিন জেল খেটে বের হলে ঝর্ণার পরিবারের সঙ্গে কাওসারের পরিবারের সমঝোতা হলে তারা উভয়ই সামাজিকভাবে বিয়ে করেন।

গত ১৬ অক্টোবর সোমবার রাত আনুমানিক ৯টায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে এক পর্যায় ঝর্ণা ঘরের দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করে। কাওসার দরজায় বার বার ধাক্কা দিলেও অপর প্রান্ত থেকে দরজা না খোলায় বিষয়টি আঁচ করতে পেরে কাওসারও পাশের রুমে থাকা ওড়না গলায় পেঁচিয়ে ফ্যানের হুকের সঙ্গে বেঁধে আত্মহত্যা করে।

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রেজাউল করিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে উভয়ের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জের ধরে তারা স্বামী স্ত্রী আত্মহত্যা করে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে