কুষ্টিয়ায় আবারও মাদক ট্র্যাজেডির ঘটনা ঘটেছে। এবার কেরু এন্ড কোম্পানীর মোড়ক সামগ্রী ব্যবহার হওয়া বিষাক্ত অ্যালকোহল উদ্ধার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর।
অ্যালকোহলের সবচেয়ে বিশ্বস্থ প্রতিষ্ঠান কেরু কোম্পানী। কি মদ বা অ্যালকোহল খেয়ে মানুষ মারা গেলো এটি তদন্তে মাঠে নেমেছে র্যাব পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর। পুলিশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ঈদের পরের দিন রবিবার মধ্যরাতে হাসপাতালে ভর্তি হতে থাকে অ্যালকোহল পানে অসুস্থ্যরা।
ঈদের তৃতীয় সোমবার ভোরে একে একে মারা যায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বড় আইলচারা এলাকার মৃত হারুণ অর রশিদের পুত্র শাহিন (৪৭)। মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামের মৃত হানিফের ছেলে রতন (২১) ও ভেড়ামারা উপজেলার রকিবুল আলমের ছেলে ছিফাতউল্লাহ। একদিন পরে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় বারুইপাড়ার সবুজ।
সর্বশেষ মারা যায় বারুইপাড়ার শাহানুর। একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ র্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের একাধিক টিম মাঠে নামে। একের পর এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার শুরু হয়। পুলিশ বারুইপাড়া এলাকার সুজনকে গ্রেফতার করে মদ বিক্রির দায়ে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার বড় আইলচারা গ্রামে অভিযান চালায়। মুকুল নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আবিস্কার করে নকল মদের কারখানা। মুকুল এবং তার স্ত্রী জাকিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মদ তৈরীর কারখানা কেরু এন্ড কোম্পানীর নকল লেবেল এবং বোতল জোগাড় করে কেমিকেল দিয়ে মদ তৈরী করে তা বিক্রি করে আসছিলো।
মুকুল পালাতক হলেও তার স্ত্রী জাকিয়াকে ৭ বোতল ভেজাল মদ ১ বোতল মদ তৈরীর কেমিকেল ও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩ শ ৩৯ টি খালি বোতল সহ গ্রেফতার করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের টিম। একটি সংস্থার তথ্যমতে, বড় আইলচারা গ্রামে রকি নামের এক ডেকোরেটর ব্যবসায়ীর দোকানে বসে মদ পান করে ওই সকল ব্যক্তিরা। রকি এবং মুকুল একে অপরের প্রতিবেশী। রকির দোকানে বসে ভেজাল মদ খাওয়ার কারণেই প্রাণ হারায় একে একে ৫ জন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পারভীন আক্তার বলেন, কেরু এন্ড কোম্পানীর নকল লেবেল ব্যবহার করে মদ ভেজাল হতে পারে এটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিলো। মৃত্যুর ঘটনার পর আমরা বিভিন্ন সোর্সে প্রাপ্ত তথ্য মতে মদ ভেজালকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ার বড় একটি অংশে রয়েছে ভারতীয় সীমান্ত। এই সীমান্ত দিয়ে ফেন্সিডিল,মদ ও ইয়াবা আসে অনায়াসে। কুষ্টিয়ায় মাদক অনেকটা সহজলভ্য। মাদক কারবারী, সীমান্তবর্তী সাধারণ মানুষ ও বিজিবির তথ্যমতে, কুষ্টিয়ায় প্রতি মাসে শত কোটি টাকার মাদক আসে সীমান্ত পেরিয়ে।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া ৪৭ ব্যাটেলিয়ানের উপ-অধিনায়ক মেজর রফিকুল ইসলাম বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রনে বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে। সীমান্তে পাহারা বাড়ানো হয়েছে। নিয়মিত মাদক কারবারীরা গ্রেফতার হচ্ছে ও মাদক উদ্ধার হচ্ছে।
যাযাদি/এসএস