ময়মনসিংহে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ১১ মার্চ ২০২৩, ১৮:০২

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ময়মনসিংহে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় হবে। বিভাগ হিসেবে আমরা তা করে দেব। মানুষের জন্য আমাদের কাজ করাই মূল লক্ষ্য। 

ময়মনসিংহ চমৎকার একটি বিভাগ, যেখানে শিক্ষা স্বাস্থ্য কৃষি খাদ্য উৎপাদন সবকিছুতেই এগিয়ে যাবে। আমরা ময়মনসিংহ বিভাগ করেছি। যদি করোনা না হতো ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ না থাকত তাহলে হলে এই বিভাগের কার্যক্রম আরো উন্নত হতো। 

আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। বাবা মা ভাই সবাইকে হারিয়েছে। শুধু মানুষের কথা চিন্তা করে এখনো কাজ করে যাচ্ছি। 

শনিবার বিকালে ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি আরো বলেন, করোনাকালে মানুষকে আমরা বিনে পয়সায় করোনার টিকা দিয়েছি। তা এখনো দিয়ে যাচ্ছি। 

বাংলাদেশে একটি মানুষও ভ‚মিহীন গৃহহীন থাকবে না। ইতোমধ্যে ৩৫ লক্ষ মানুষ ঘর পেয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে আরো ৪০ লক্ষ মানুষ ঘর পাবে। বিএনপি জামাতের আমলে এই অঞ্চল সন্ত্রাসের জনপদে লিপ্ত ছিল। লটুপাট সন্ত্রাস, বাংলা ভাই সবই বিএনপির। 

তাদের সময় স্বাক্ষরতার হারও কম ছিল। বিএনপি নেত্রী উর্দু ছাড়া কোন বিষয়ে পাশ করেনি। জিয়ারউর রহমান ম্যাট্রিক পাস। তাঁর ছেলে কোন এক জায়গা থেকে একটি সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেছে। 

এজন্য তারা শিক্ষার দিকে দীক্ষায় অমনযোগি। আজকে সাক্ষরতার ৭৫ শতাংশের উপরে। সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন তা আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। স্কুলগুলো আধুনিকায়ন হচ্ছে। পাঁচ হাজার ২৭২টি ডিজিটাল ল্যাব করে দেয়া হয়েছে। আজকে ঘরে বসেই ছেলেরা অনলাইনে আয় করতে পারছে। যুব সমাজের কর্মসংস্থানের জন্য বেসরকারী ভাবে অনেক সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, আমরা ঘরে ঘরে ভাতা দিয়েছি। আমরা চাই দেশের প্রত্যেকটা মানুষ যেনো উন্নত জীবন পায়। ২০০১ সালে লুটেরার বিএনপি আসায় সব লুটে খায়। তাদের সময়ে খাদ্য ঘাটতি ছিল। আল্লাহর রহমতে এখন আর খাদ্য ঘাটতি নেই। 

এক কোটি মানুষকে আমরা মাত্র ৩০ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারার সুযোগ করে দিয়েছি। অনেককে ১০টাকা কেজিতে চাল দিচ্ছি। আবার যাদের একে বারে সামর্থ্য নেই তাদের বিনামূল্যে চাল দেয়া হচ্ছে। আমরা চাই কোন মানুষ কষ্ট না পাক। গবেষণার মাধ্যমে সবজিসহ উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। খাদ্য ঘাটতি দূর করতে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাধি থাকবে না। 

নিজেদের খাদ্য নিজেদের উৎপাদন করতে হবে। যাতে করে আমাদের কারো কাছে হাত পাততে না হয়। আমাদের মাটি উর্বর তাই আমরা নিজেরা ফসল ফলাব। আমার নিজের সকল অনাবাদি জমি চাষের আওতায় এনেছি। মূল কথা হচ্ছে উৎপাদন বাড়াতে হবে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। সেখানে যুবসমাজের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। বিনা জামানতে যুবসমাজকে লোন দেয়া হচ্ছে। যাতে করে তারা অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারে। 

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি বলে বাংলাদেশটাকে নাকি আমরা ধ্বংস করে দিচ্ছি। এই যে এতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করলাম এগুলো ধ্বংসের নমুনা কি? তা আপনারাই বলুন। তারা তো এতিমদের টাকা মেরে খায়। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চলমান। আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াই তারা এসে কমায়। আমরা প্রতিটি ঘর আলোকিত করতে চাই। আমরা যদি ডিজিটাল বাংলাদেশ না করতাম তাহলে তারা এতোকিছু বলতে পারত না। ২০২১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। তা আমাদের ধরে রাখতে হবে। এখন আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ করার।  

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আগে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এহতেশামূল আলমের সভাপতিত্বে জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদের, আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাসিম, শফিউল আলম নাদেল, মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ। 

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কাজী খালিদ বাবু, গৃহায়ন ও গণপুর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, ময়মনসিংহ সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু, ফাহমী গোলন্দাজ এমপি, রুহুল আমিন মাদানী এমপি, এডভোকেট মোসলেম উদ্দিন এমপি, কাজীম উদ্দিন আহমেদ এমপি, মনিরা সুলতানা এমপি, আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন এমপি, নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি, জুয়েল আরেং এমপিসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। 

জনসভা পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল এবং মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক মোহিতুর রহমান।  

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদের উপস্থি জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা খুশি থাকলে ফখরুল সাহেব ভাল থাকতে পারে না, আপনারা ভাল থাকলে বিএনপি বেজার। মানুষ খুশি হলে বিএনপির ভোট কমে যায়। এতদিন দৌড়াতে দৌড়াতে বিএনপি এখন দাড়েিয় গেছে। 

পথ হারিয়ে বিএনপি মানববন্ধনে দাড়িয়ে গেছে। বিএনপি এখন দিশোহারা, ফান্দে পড়িয়ে বগা কান্দে। দিশেহারা বিএনপি এখন চোখে অন্ধকার দেখছে। বিএনপিকে এদেশের মানুষ ফিরে পেতে চায়? ধানের শীষ মানুষ এখন চায় না। ধানের শীষ পেটের বিষ, ধানের শীষের আরেক নাম পেটের বিষ। মানুষ এখন বলে সাপের বিষ। নৌকায় শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়েছেন বলে দেশ এখন এত উন্নয়ন।
যাযাদি/ এম