সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের আটঘর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছানু মিয়া কর্তৃক বাঁশের বেড়া ও মাটি ফেলে একই গ্রামের প্রবাসী আখলিছ মিয়া গংদের বাড়ির চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ার ফলে আখলিছ মিয়া গংদের বাড়িতে বসবাসকারী তার চাচাতো ভাই আরশ আলী পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবণ যাপন করছেন। তাছাড়া আরশ আলীর স্কুল, মাদরাসায় পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।
এ ঘটনায় আরশ আলী বাদি হয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারী অতিরিক্ত জেলা ম্যজিস্ট্রেট আদালত সুনামগঞ্জে একটি মামলা দায়ের করেন। বিবিধ মামলা নং ২২০/২০২৩ইং। মামলায় মৃত হাজী তবারক আলীর পুত্র ছানু মিয়া ও ছানু মিয়ার পুত্র কামরান মিয়াকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। আদালত কর্তৃক মামলাটি তদন্তের জন্য জগন্নাথপুর থানায় প্রেরন করলে থানার উপ-পরিদর্শক জিয়া উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বাদী মামলায় উল্লেখ করেন জগন্নাথপুর উপজেলাধীন ১৪১নং জেলস্থিত নোয়াগাঁও আটঘর মৌজার ৪১৪নং খতিয়ানের ২৯৮নং এস এ দাগে ১৪শতক সরকারি অর্পিত সম্পত্তি রয়েছে। আব্দুল করিমের পুত্র আখলিছ মিয়া গং ভিপি মোকাদ্দমা ১৪/৮৫-৮৬ ইং মূলে উক্ত ভূমি বন্দোবস্তপ্রাপ্ত হইয়া বাড়িঘর নির্মাণ করিয়া বসবাস করিয়া আসিতেছেন। বন্দোবস্তকৃত ভূমির মধ্যে উত্তর পাশে ৬ হাত প্রস্থ চলাচলের সড়ক রয়েছে। মামলায় উল্লেখিত ভূমির পূর্ব দিকে থাকা সরকারি সড়কে চলাচলের ভূমির উত্তর পাশে ৬ হাত প্রস্থ একটি কাচা রাস্তা রয়েছে।
রাস্তা দিয়ে লন্ডন প্রবাসী আখলিছ মিয়া গং ও তার পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করে আসছেন। উক্ত রাস্তা ছাড়া যাতায়াতের বিকল্প আর কোন রাস্তা নাই। বিবাদীগণ ধনাঢ্য, প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। গত ১৮ ফেব্রুয়ারী ছানু মিয়াসহ তার লোকজন উক্ত রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করে। আরশ আলী তাতে বাধা নিষেধ করলে বিবাদীগণ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার ওপর আক্রমণ করে।
এ বিষয়ে লন্ডন প্রবাসী গয়াস মিয়া জানান, এ রাস্তা দিয়ে আখলিছ মিয়া গং ও তাদের পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করে আসছেন। হঠাৎ করে ছানু মিয়া রাস্তাটি বাঁশের বেড়া ও মাটি ফেলে বন্ধ করে দেয়। আমি বিরোধ নিস্পত্তির চেষ্টা করলেও ছানু মিয়ার অসহযোগিতায় আমার পক্ষে বিরোধটি নিস্পত্তি সম্ভব হয়নি।
লন্ডন প্রবাসী আখলিছ মিয়ার চাচাতো ভাই আরশ আলী জানান, হঠাৎ করে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ায় যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় আমার স্কুল, মাদরাসায় পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেনা। এতে তাদের লেখাপড়া মারাত্মকভাবে ক্ষতি হচ্ছে। তিনি আরো জানান, দুই হাজার সালে তৎকালিন সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ছানু মিয়া ও আমার চাচাতো ভাই আখলিছ মিয়া স্বাক্ষরিত এক স্মরণলিপির মাধ্যমে উভয় পক্ষ যাতায়াতের জন্য ৬হাত প্রস্থ রাস্তার চুক্তিপত্র সম্পাদন হয়। বর্তমানে ছানু মিয়া উক্ত চুক্তিপত্রের শর্ত ভঙ্গ করে বেড়া ও মাটি ফেলে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। উক্ত বেড়া ও মাটি অপসারণ করে চলাচলে ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের সু-দৃষ্ঠি কামনা করছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই জিয়া উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আইন শৃৎখলা বজায় রাখতে উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
যাযাদি/ এস