ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সকালে নির্যাতন, দুপুরে মাদরাসার ছাত্রের লাশ উদ্ধার
প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৮:৪৭
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোহাম্মদ আলী-(১০) নামে এক মাদরাসার ছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার দুপুরে শহরের কাউতলী এলাকার ইব্রাহিমিয়া তাহফিজুল কুরআন মাদরাসার বাথরুম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
সকালে পড়া না পাড়ার কারনে মাদরাসার শিক্ষক হুসাইন আহমেদ ছাত্র মোহাম্মদ আলীকে বেদম মারধোর করার পর দুপুরে মাদরাসার বাথরুম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত মোহাম্মদ আলী কাউতলী গ্রামের কাউছার মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ মাদরাসার শিক্ষক হুসাইন আহমেদকে আটক করে ও মাদরাসায় থাকা সিসি ক্যামেরা জব্দ করে।
মৃত মোহাম্মদ আলীর পিতা কাউছার মিয়া অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। রোববার দুপুরে খাবার দিতে এসে তিনি মাদরাসার একটি বাথরুমে ছেলের লাশ দেখতে পান। তখন তার পা মাটিতে লাগানো অবস্থায় ছিলো।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীনসহ পুলিশ কর্মকর্তরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে মাদরাসার বাথরুম থেকে মোহাম্মদ আলীর লাশ উদ্ধারের পরম মাদরাসায় থাকা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
তারা মাদরাসার গেইটে এসে ভিড় জমায়। সরজমিনে গিয়ে পুলিশসহ একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইব্রাহিমিয়া তাহফিজুল কুরআন নামক মাদরাসাটিতে ৭০/৭৫ জন শিক্ষার্থী আছে। প্রতিদিন ভোর থেকেই তাদেরকে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়ার কাজ শুরু করা হয়। অন্যান্য দিনের মতো রোববার ভোর থেকে সেখানে পড়ানো শুরু হয়। সকালে পড়া না পারার কারনে মাদরাসার শিক্ষক হুসাইন আহমেদ মোহাম্মদ আলীকে বেদম মারধোর করেন।
একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, দুপুরে জোহরের নামাজের পর তারা মোহাম্মদ আলীকে খোঁজে পাচ্ছিল না। এর মধ্যে এক শিক্ষার্থী গিয়ে বাথরুমে মোহাম্মদ আলীর ঝুলন্ত লাশ দেখে শিক্ষকদেরকে জানায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে।
মাদরাসা শিক্ষক মোঃ সানাউল্লাহ বলেন, দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এর মধ্যে সামাইন নামে এক শিক্ষার্থী এসে আমাকে জানায় বাথরুমে ঝুলন্ত অবস্থায় মোহাম্মদ আলীকে দেখেছে। পরে আমি ওখানে গিয়ে তার লাশ দেখতে পেয়ে মাদরাসার অন্যান্য হুজুরদেরকে জানাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক হুসাইন আহমেদ বলেন, সকালে পড়া না পারায় মোহাম্মদ আলীকে বেত্রাঘাত করি। পরে বিষয়টি তাকে বুঝিয়েও বলি। পড়া না পারার বিষয়টি তার বাবাকেও অবহিত করি। দুপুরে বাথরুমে তার লাশ দেখতে পেয়ে আমরা হতভম্ভ হয়ে যাই। তিনি বলেন, ‘আমি যদি হত্যা করে থাকি, তাহলে সিসি ক্যামেরাতেই সেটা ধরা পড়বে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে মাদরাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা করি। কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত করতে তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করি।
যাযাদি/এসএস