পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ভ্রমণপিপাসুদের নজর কাড়তে জোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে গোয়াইনঘাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।
সবুজ পাহাড়, নদী, চা-বাগান, স্বচ্ছ জল আর পাথরে ঘেরা সিলেটের পর্যটন কেন্দ্র গোয়াইনঘাট। প্রতি বছরই ঈদ মৌসুমে উপজেলার সবক'টি পর্যটন স্পটে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে পর্যটন স্পটগুলোতে। অন্যান্য বারের মতো এবারও ঈদকে সামনে রেখে ভ্রমণপিপাসুদের নজর কাড়তে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে গোয়াইনঘাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।
এবার ঈদকে সামনে রেখে পর্যটন কেন্দ্রের আবাসিক হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট ও দোকানগুলোতে প্রস্তুতী নেয়া হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, মায়াবী ঝর্ণাসহ সব কটি পর্যটনস্পটে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা।
পাশাপাশি গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পটসমূহে বেড়াতে আসা পর্যটক দর্শনার্থীরা চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, ইভটিজিং, অজ্ঞান পার্টি, ট্যুরিস্ট গাইড ও ক্যামেরাম্যানদের দ্বারা যাতে প্রতারিত না হয় পর্যটন পুলিশ এবং গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েকটি ইউনিট নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট এবং থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এদিকে, পর্যটনকেন্দ্রে আকর্ষণীয় স্থান সমূহে পর্যটন বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে জাফলং পর্যটন কেন্দ্রের সার্বিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আয়োজনে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টের ব্যবস্থাপকেরা জানান, অতিথিদের স্বাগত জানাতে হোটেল-মোটেলে সব ধরনের আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। যদি প্রাকৃতিক দূর্যোগ না আসে তাহলে ব্যাপক পর্যটক আসবেন বলে ধারণা করছেন তাঁরা। ঈদে পর্যটকদের সেবাই থাকবে তাঁদের মূল লক্ষ্য।
এদিকে, গেল কয়েকদিন আগে ভয়াবহ বন্যায় স্পট বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের যে ক্ষতি হয়েছে তা ঈদে পুষিয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন ব্যবসায়ী মানিক মিয়া বলেন, ঈদে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসার সম্ভাবনা রয়েছে। গেল কয়েকদিন ধরে ভারি বর্ষণে বন্যার কারণে ব্যবসা তেমন হয়নি। ঈদে সেই আলোকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রস্তুতী রয়েছে।
জাফলং গ্রীণ রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাবলু বখ্ত জানান, ঈদকে সামনে রেখে আমাদের রিসোর্টে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। পর্যটকেরা যাতে এখানে এসে কম খরচে নিরাপদে থাকতে পারেন সেদিকে লক্ষ্য রয়েছে।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম পিপিএম জানান, এবারের ঈদে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটকদের সেবার মান বৃদ্ধি করতে পুলিশ কাজ করবে। পর্যটকদের সেবার লক্ষ্যে জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে একাধিক ইউনিট নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করবে। পর্যটকদের নিরাপদ আগমন ও প্রস্থানে আমাদের সার্বক্ষণিক নজরদারি জোরদার থাকবে।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, পর্যটন কেন্দ্র জাফলংসহ গোয়াইনঘাটের সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও তাঁদের ভ্রমণ নির্বিঘ্নকরণে উপজেলা প্রশাসন পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের বিভিন্ন যায়গা থেকে আসা পর্যটকরা যাতে নির্বিগ্নে ভ্রমণ করে যেতে পারে সে দিকে উপজেলা প্রশাসন সব সময় স্বোচ্ছার থাকবে। ঈদুল আযহা উপলক্ষে ছুটির দিনগুলোতে প্রশাসনের বিভিন্ন টিম মাঠে নিযুক্ত থাকবে। পর্যটনকেন্দ্রে সকল প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন যৌথভাবে কাজ করবে।
যাযাদি/ এসএম