আগামী জুলাই থেকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার কথাও জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, যারা নিয়ম মেনে কর দিচ্ছেন আগামী বাজেটে তাদের কিছু সুবিধা দেওয়া হবে। একটা ম্যাসেজ আপনারা আগামী বাজেটে পাবেন। এনবিআর যেই জায়গাগুলোতে একটু বেশি কড়াকড়ি করেছে, সেগুলো সহজীকরণের একটা ম্যাসেজ আপনারা পাবেন।
রোববার (২৩ ফেব্রম্নয়ারি) সকালে আগারগাঁওয়ের রাজস্ব বোর্ডের মিলনায়তনে আমদানি-রপ্তানি হাব ও শুল্কের আধুনিকায়নে কৌশলগত পরিকল্পনার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, কমপস্নায়েন্ট ট্যাক্স পেয়ারদের কাছ থেকে যাতে সহজে কর আদায় করা যায় এ জন্য আইন কানুনে অনেক বেশি অ্যাগ্রেসিভ মেজার নিয়েছি। আমরা চেষ্টা করবো, পুরাটা উঠাতে পারবো না। যখন কর জাল বাড়াতে পারবো; শতভাগ কর দাতা যখন কর দেবেন, শতভাগ ভ্যাট দাতা ভ্যাট দেবেন তখন আমরা রাষ্ট্রে অর্থের প্রয়োজন মেটানো সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, অনলাইন রিটার্ন সাবমিশনে কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে তা শোনার জন্য একদিন সেমিনার করবো। সমস্যাগুলো শুনবো, সেগুলো অ্যাড্রেস করবো। যাতে আগামী বছরের পহেলা জুলাই থেকে অনলাইন রিটার্নকে পুরোপুরি বাধ্যতামূলক করতে পারি। একইভাবে করপোরেট ট্যাক্স রিটার্নটাও অল্টারনেট করার কাজ শুরু করেছি, যোগ করেন তিনি। অডিট সিলেকশনও অটোমেশন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কমপস্ন্যায়েন্ট ট্যাক্স পেয়াররা যাতে হয়রানির স্বীকার না হন সেজন্য আমরা বলেছি অডিট সিলেকশন হবে অটোমেটেড পদ্ধতিতে। সেটা করতে গেলে আমার টাকা লাগবে। পেপার রিটার্ন দিলে আমরা টাকা পাবো না। সেটা করতে পারবো না। সে কারণে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে আলোচনা করে কিছু কিছু খাতে অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক করেছি। রেজাল্ট বেশ ভালো, আমরা ফিডব্যাক পেয়েছি।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পুরানো ধ্যানধারণা নিয়ে অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারবো না। আপনারা যদি কমপস্ন্যায়েন্ট হন, অথোরাইজেশড ইকোনমিক সার্টিফিকেটটা নেন তাহলে আমাদের কাজটা আরও সহজ হয়ে যায়। যারা ফাঁকিবাজ তারা ঠিকই ফাঁকি দেয়, আরা যারা নিয়ম কানুন মানেন (কমপস্ন্যায়েন্ট) তাদের ওপর করের বোঝা বাড়ানো হয়। এটা ভ্যাট, কাস্টমস ও ট্যাক্স সব খানেই আছে। আমরা এখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। আমাদের কমপস্নায়েন্টদের দেখে অন্যরা কমপস্ন্যায়েন্ট হবে। আমরা এই প্রতিযোগিতা দেখতে চাই।
এক্সপোর্ট ইমপোর্ট হাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা পুরানো পেস্নয়ার তারাই সব দখল করে আছে। অথচ দেশ বড় হচ্ছে নতুন নতুন পেস্নয়াররা মার্কেটে আসার চেষ্টা করছে। প্রায় আমরা শুনি যে অলিগোপলি তৈরি হয়েছে, অলিগার্ক তৈরি হয়েছে। সব খানেই অল্প কয়েকজন ব্যবসায়ের সঙ্গে থাকছে। নতুন ব্যবসায়ীদের আনতে চাইলে তাদের সব প্রশ্নের জবাব এক জায়গায় থাকতে হবে। এক্সপোর্ট- ইমপোর্ট হাবে আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, অর্থনীতিতে ইতিবাচক ধারা এসেছে। গত ৬ মাসে রপ্তানি ১৩ শতাংশ বেড়েছে। জানুয়ারিতে ৭ শতাংশ কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বেড়েছে। সামনে এগিয়ে যেতে নেতিবাচক বিষয় সরিয়ে ফেলতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং, এনবিআর সদস্য কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সভাপতি জাভেদ আখতার প্রমুখ।