পুঁজিবাজার রক্ষায় মতিঝিলে বিনিয়োগকারীদের সমাবেশ

বিএসইসি'র চেয়ারম্যান ও আইসিবি'র চেয়ারম্যানকে অপসারণসহ ১১ দাবি

প্রকাশ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
পুঁজি রক্ষার দাবি নিয়ে মতিঝিলের রাস্তায় সমাবেশ করছেন শেয়ারবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) ব্যানারে সমাবেশ করছেন তারা। সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরোনো ভবনের সামনে এই সমাবেশ শুরু হয়। হাজারের বেশি বিনিয়োগকারী সমাবেশে উপস্থিত রয়েছেন। এখান থেকে ১১ দাবি জানায় বিনিয়োগকারীরা। তাদের দাবির মধ্যে অন্যতম বিএসইসি'র চেয়ারম্যান ও আইসিবি'র চেয়ারম্যানকে দ্রম্নত অপসারণ করে নতুন যোগ্য চেয়ারম্যান নিয়োগ করে পুঁজিবাজার বাঁচাতে হবে। এছাড়াও বর্তমান মার্কেট পরিস্থিতির কারণে গেইন-ট্যাক্স সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে। বর্তমান মার্কেট পরিস্থিতির কারণে অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে (তদন্ত ও অসময়ে জেড গ্রম্নপে প্রেরণ ইত্যাদি)। বিনিয়োগকরীদেও অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানোর বিধান সংস্কার করা প্রয়োজন। কারণ কোম্পানির জেড ক্যাটাগরিতে গেলে সর্বোপরি বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন। কোম্পানিগুলোকে আয়ের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে। ব্যাংক, ফাইন্যান্স, ইন্সু্যরেন্স, মিউচু্যয়াল ফান্ড ও আইসিবিসহ পুঁজিবাজারে তাদের যতটুকু বিনিয়োগ করার কথা তা শতভাগ কার্যকর করতে হবে। টাস্ক ফোর্সের সংস্কারগুলো মিডিয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের দ্রম্নত জানাতে হবে। সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করে বিনিয়োগকারীকে ক্ষতিগ্রস্ত বা সর্বস্বান্ত করা হচ্ছে। কোম্পানিগুলোকে ন্যূনতম শেয়ার ধারণ ৩০ শতাংশ অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। \হবিএসইসি'র দায়িত্ব অন্তত ১০টি মিউচু্যয়াল ফান্ড দ্রম্নত সময়ের মধ্যে বাজার বিনিয়োগ নিয়ে আসা। পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি পরপর দুই বছর লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ হলে তাহার বোর্ড পুনর্গঠন করতে হবে। ফোর্স সেল বন্ধ করতে হবে। শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী পুঁজি রক্ষার দাবিতে বিনিয়োগকারীরা আন্দোলনে নামার পর দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সোমবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখেয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এতে বেড়েছে সবগুলো মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক দরপতন দেখা দিলে গত শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে মতিঝিলে সমাবেশের ডাক দেন বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীরা এই সমাবেশের ডাক দেওয়ার পর রোববার শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। আর সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শেষ হওয়ার পর ডিএসইর পুরোনো ভবনের সামনের রাস্তায় সমাবেশ শুরু করেন বিনিয়োগকারীরা। সমাবেশ থেকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ তাৎক্ষণিক ১১টি দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এদিকে বিনিয়োগকারীদের সমাবেশের দিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ২১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৩টির। আর ৬৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯০৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৩৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৩১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৫৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৭৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা।