আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পূরণে আগামী মার্চের মধ্যে সব ধরনের ঋণ শ্রেণীকরণে আন্তর্জাতিক চর্চা শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নীতিমালায় নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কোনো ঋণ পরিশোধ না করলে তা মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে গণ্য করা হবে। এরপর অনাদায়ী হিসেবে ওই ঋণ ৯০ দিন অতিক্রম করলে খেলাপি হয়ে যাবে। বুধবার খেলাপি ঋণ বিষয়ে সর্বশেষ নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই নীতিমালা আগামী বছরের এপ্রিল মাস থেকে কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
সাবেক আওয়ামী লীগের রাজনীতি-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও বড় ঋণখেলাপিদের চাপে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণসংক্রান্ত নীতিমালা শিথিল করেছিল। বর্তমানে কোনো ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার এক বছর সময় পর্যন্ত গ্রাহক খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ পান। ফলে গ্রাহক নতুন করে ঋণ নিতে পারেন।
নতুন এই নীতিমালা কার্যকর হলে দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ পাঁচ লাখ কোটি টাকা ছাড়াতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের সহযোগী ব্যবসায়ীদের দেওয়া ঋণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ রেকর্ড দুই লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এ ছাড়া অবলোপনকৃত ঋণ ৬০ হাজার কোটি, অর্থঋণ আদালতে আটকা দুই লাখ ৭৮ হাজার কোটি। আদালতে রিট করার মাধ্যমে স্টে অর্ডার নেওয়া ৭৬ হাজার কোটি টাকাও আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী খেলাপির খাতায় যুক্ত হবে। তাই আগামী বছর প্রকৃত হিসাবায়ন করলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ পাঁচ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।