কোনো কোম্পানিতে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি থাকুক আর না থাকুক, প্রতিষ্ঠান চালিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে দেব না। সেটা এস আলমের হোক কিংবা বেক্সিমকোর হোক। প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় সম্পদ। ব্যক্তি থাকুক আর না থাকুক, প্রতিষ্ঠান থাকবে, প্রতিষ্ঠান চলবে।'
এসব বড় শিল্পগ্রম্নপের সঙ্গে যে বহু মানুষের জীবিকা জড়িত, সে কথা তুলে ধরে গভর্নর বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায়, সে বিষয়েও সরকার কাজ করছে।
'সেখানে আমাদের শ্রমিকদের জীবিকা আছে। আবার সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ব্যাংকের সম্পর্ক আছে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আলাদা। আমাদের প্রধান লক্ষ্য, আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানকে মরতে দেব না। ফান্ড ভাঙতে দেব না। সেই ফান্ডকে আরও গড়তে চেষ্টা করব। তাড়াহুড়া করে ইমোশনালি কোনো কিছু করা যাবে না। ইমোশন দিয়ে দেশ চললে সেটা কিন্তু ভালো হয় না।'
২০১৭ সালের পর ইসলামী ব্যাংক থেকে '৮০% ঋণ নিয়েছে' এস আলম
৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর ইসলামী ব্যাংকেও ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন পর্ষদ গঠন করে দিলে এস আলম গ্রম্নপের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয় ইসলামী ব্যাংক।
নতুন বোর্ড 'স্বচ্ছতার সঙ্গে' কাজ করছে মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, তারল্য ঘাটতিতে পড়া ইসলামী ব্যাংক ইতিবাচক ধারায় ফিরছে।
২০১৭ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ৮০ শতাংশ ঋণ এস আলম নিয়েছে। এটা যে বিশাল ক্ষতি, তা একদিনে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না। নতুন বোর্ড দেওয়ায় তারা আবার পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করছে। এতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
গভর্নর বলেন, অযোগ্য ব্যক্তিদের আর প্রতিষ্ঠানে রাখা যাবে না। যারা নিজের স্বার্থে কাজ করছে, তাদের রাখা যাবে না।
কিন্তু যারা যোগ্য ব্যক্তি, নিঃস্বার্থভাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করবেন, কেন তারা থাকবেন না? যারা অভিজ্ঞ, তারা এসব প্রতিষ্ঠানে থাকতেই পারেন। ঢালাওভাবে কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। ইসলামী ব্যাংকে কারা থাকবেন কিংবা কারা থাকবেন না, সে বিষয়গুলো বোর্ড থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর বোর্ডে যাদের দেওয়া হয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকিং খাত-বিষয়ক অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবেও কাজ করছেন।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'দুর্বল ব্যাংকগুলোকে বাঁচানোর জন্য নতুন কৌশল নেওয়া হবে। তবে এসব কৌশল কী, তা এখনই বলব না। সামনে তা জানানো হবে। ডিপোজিটরদের স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আগের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তা করা হচ্ছে না। নতুন বোর্ড কর্মপরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করছে একটু একটু করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবাইকে রক্ষা করবে। তবে ছেলে এসে ললিপপ চাইলেই সেটা দেওয়া হবে না। নিয়মের মধ্যে সাপোর্ট দেওয়া হবে