কিছুতেই পতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। মাঝেমধ্যে শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বতার দেখা মিললেও পরক্ষণেই আবার দরপতন হচ্ছে। ফলে পতনের মধ্যেই আবদ্ধ রয়েছে শেয়ারবাজারে। এতে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করে পুঁজি হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললেও, চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৭ নভেম্বর) আবার দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের প্রথম তিন ঘণ্টা সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে। তবে দুপুর ১টার পর এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায়। ফলে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে।
ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়েছে, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৫০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৫টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৮২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫০৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৭৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৭০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ফারইষ্ট নিটিংয়ের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২০ কোটি ৩৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ১৬ কোটি ৬ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সানলাইফ ইন্সু্যরেন্স। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেক্সিমকো ফার্মা, ইসলামী ব্যাংক, আইটিসি, অগ্নি সিস্টেম, লাভেলো আইসক্রিম, গ্রামীণফোন এবং ওরিয়ন ফার্মা।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৬টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয় ৯ কোটি ১০ লাখ টাকা।