ক্ষতিকর পণ্য উৎপাদন না করার আহ্বান

মানহীন পণ্যে সয়লাব হচ্ছে বাজার : ভোক্তার ডিজি

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে 'মানহীন বিদেশি পণ্যের ডাম্পিং স্টেশন নাকি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মানসম্মত পণ্য :প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ' বিষয়ক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ভোক্তার ডিজি মোহাম্মদ আলীম আখতার খান -সংগৃহীত
দেশে চাহিদার সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়ছে ভেজাল, নকল, মানহীন, অনুমোদনহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী সামগ্রী। বাংলাদেশ যেন বিদেশি এসব পণ্যের ডাম্পিং স্টেশন। এসব পণ্যের আমদানি ও বিক্রি প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন মানহীন পণ্যে সয়লাব হচ্ছে বাজার। এগুলো ব্যবহার করে একদিকে ভোক্তারা যেমন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন, তেমনই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় শিল্পখাত। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞ আলোচক এবং খাত সংশ্লিষ্টরা। 'মানহীন বিদেশি পণ্যের ডাম্পিং স্টেশন নাকি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মানসম্মত পণ্য : প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ' বিষয়ক সেমিনার আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিনকেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশ। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, দেশি পণ্য দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে পারে। এজন্য আমদানি নির্ভরতা কমানোর ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। তিনি বলেন, নিজেরা পণ্য উৎপাদন করতে না পারলে বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা যায় না। মানুষ সবাইকে নিজের মতো ভালোবাসলে পণ্য উৎপাদনে জালিয়াতি করতে পারত না বলেও মন্তব্য করেন। এজন্য ক্ষতিকর কোনো পণ্য উৎপাদন না করার আহ্বান জানান ভোক্তার ডিজি। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, বিদেশি মানহীন পণ্য আমদানির ফলে বিপুল অংকের টাকা চলে গেছে বিদেশে। তবে দেরিতে হলেও আন্তর্জাতিক মানের পণ্য উৎপাদন শুরু করেছে দেশীয় কিছু প্রতিষ্ঠান। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মিশেলে এসব প্রতিষ্ঠানের পণ্য স্থানীয় বাজারে আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। নিজস্ব কারখানায় মানসম্মত পণ্য বাজারজাতকরণে এরই মধ্যে তারা সাড়াও ফেলেছে। এ সময় অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির পণ্যের গুণগতমান নিশ্চিতে জোর দেন। তিনি বলেন, বিদেশি নিম্নমানের পণ্য আমদানি না করে দেশে উন্নত মানের পণ্য উৎপাদন হলে এবং ব্যবহারে মানুষ আগ্রহী হলে দেশের অর্থনীতির জন্যও তা ইতিবাচক। এতে লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়। প্রকারান্তরে, আমদানি হলে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যায়। আর নিম্নমানের মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক ইসহাকুল হোসেন সুইট বলেন, ক্রেতাদের মধ্যে দেশীয় পণ্য ব্যবহারে আগ্রহ বাড়ছে। তিনি এ খাতে আরও বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে সরকারের নীতি সহায়তা বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও মনে করেন। এসএমই ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলী জামান বলেন, দীর্ঘদিন দেশে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন না হওয়ায় বিদেশি পণ্যের ডাম্পিং স্টেশন হয়েছে বাংলাদেশ। এমন অবস্থা চলতে পারে না। খুশির কথা যে, দেশে এখন মানসম্মত পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে, তার প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহও বাড়ছে। দেশে উৎপাদিত গুণগত মানের পণ্যের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস যেন বাড়ে সে উদ্যোগ সরকারকে নিতে হবে।