আড়াই মাস ধরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে যে পতন চলছে, এর ধারাবাহিকতায় এক দিনেই সূচক কমল ১৪৯ পয়েন্ট। এতে রোববার প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স নেমে গেছে পাঁচ হাজার পয়েন্টের নিচে।
অন্তর্র্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর একাধিক দিন শত পয়েন্ট সূচক পড়েছিল। এর মধ্যে ২ অক্টোবর কমেছিল ১২৮ পয়েন্ট। সেই হিসাবে রোববারই সূচকের সর্বোচ্চ পতন ঘটেছে।
এদিন বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩০৬ কোটি টাকা।
ওইদিন সূচক ছিল ৫ হাজার ১১৪ পয়েন্ট। রোববার তা কমে নেমেছে ৪ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে।
এর আগে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭০০ কোটি টাকার ঘরে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরের কয়েকদিন তা হাজার কোটি টাকাকেও ছাড়িয়ে যায়।
বাজার-সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরের কয়েকদিন বাজারে তেজিভাব দেখা গেলেও আগস্টের মাঝামাঝি থেকে পতন চলছে থেমে থেমে। এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর ২৭ কোম্পানিকে জেড শ্রেণিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হলে পতন আর থামেনি।
নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ৮০ শতাংশ লভ্যাংশ বিতরণকারী কোম্পানিকে জেড থেকে আগের শ্রেণিতে ফেরায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কিন্তু এতেও বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।
রোববার দিনের শুরুতে সূচকের উত্থান হলেও তা আধ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয়নি। ব্যাংক, বীমা, বস্ত্র, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন খাতের বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতন হয় দিনভর।
এদিন লেনদেন হওয়া ৩৯৬টি কোম্পানির মধ্যে দর কমে ৩৪১টির, বাড়ে ২৯টির এবং ২৬টির দর অপরিবর্তিত থাকে।
বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ার দর বাড়ায় এদিন ডিএসইর (দর বৃদ্ধি) শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় পাঁচটি ব্যাংক স্থান পায়।
লেনদেনের তথ্য অনুযায়ী, খাত হিসেবে সর্বোচ্চ ৫৯ কোটি টাকার লেনদেন হয় ব্যাংক খাতে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। এরপরের অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতের হিস্যা ১২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আর তৃতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি।
ক্লোজিং প্রাইস হিসাবে একক কোম্পানির মধ্যে আগের দিনের চেয়ে ২২ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে বস্ত্র খাতের এসকোয়ার নিট কম্পোজিটের। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করায় রোববার কোম্পানিটির দরে সার্কিট ব্রেকার ছিল না।
কোম্পানিটির দিনের শেষ দর ছিল ১৮ টাকা ৮০ পয়সা, যা আগের দিনের তুলনায় ৩ টাকা ৪০ পয়সা বেশি।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রানার অটোসের শেয়ার দর বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ। এ ছাড়া সাড়ে ৫ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে কে অ্যান্ড কিউ লিমিটেডের।
অন্যদিকে ক্লোজিং প্রাইস হিসাবে দরপতনের তালিকায় শীর্ষে আসে ইফাদ অটোস ও সাইফ পাওয়ারটেক। কোম্পানি দুটি দর হারিয়েছে ১৬ শতাংশ করে। ১০ শতাংশ দর হারিয়ে এই তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে আছে কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ।