শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

৬০ ডলারে নামতে পারে তেলের দাম : জেপি মরগ্যান

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
৬০ ডলারে নামতে পারে তেলের দাম : জেপি মরগ্যান

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম আগামী বছর আরও কমবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগ্যান। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে তারা বলেছে, আগামী বছর তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে নেমে আসতে পারে।

জেপি মরগ্যান মনে করছে, আগামী এক বছরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ওঠানামা করতে পারে। চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারে উন্নীত হতে পারে। এরপর ২০২৫ সালের শেষ দিকে ৬০ ডলারে নামতে পারে। খবর বিজনেস টুডে।

প্রতিবেদনে জ্বালানি তেলের বাজারে বিদ্যমান অস্থিরতার জন্য পশ্চিম এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনাকে দায়ী করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, এই উত্তেজনা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো শক্তিশালী অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। ফলে তারা এই পরিস্থিতির রাশ টেনে ধরার চেষ্টা করবে।

বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজারে স্থিতিশীল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে জেপি মরগ্যান। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৭১ ডলার। অক্টোবরের শুরুতে তা প্রায় ৮১ ডলারে পৌঁছে। চাহিদা নিয়ে উদ্বেগের কারণে আবারও তা ব্যারেলপ্রতি ৭৩ ডলারে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় অর্থনীতির চাহিদা কমে যাওয়ায় ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেও তেলের দাম সেভাবে বাড়ছে না। অর্থাৎ অর্থনীতির এই চাহিদা-জোগানের তত্ত্ব মেনেই তেলের দামের এই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি তেল আমদানি করে চীন। তাদের চাহিদার ওপর বিশ্ববাজারে তেলের দাম অনেকটা নির্ভর করে। কিন্তু সেই চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। সেখানে প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ায় যুদ্ধের শঙ্কার মধ্যেও তেলের দাম সেভাবে বাড়ছে না। বছরের প্রথম ভাগে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চীনের তেল আমদানি কমেছে। চাহিদা কম থাকায় তেল খুব একটা মজুত করছে না চীন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলের দাম কমার এটাই মূল কারণ।

জেপি মরগ্যানের গেস্নাবাল কমোডিটি স্ট্র্যাটেজিস বিভাগের প্রধান নাতাশা কানেভা বলেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, পশ্চিম এশিয়ার সংঘাতের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা বাড়বে।

ডাচ বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান রাবোব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ২০২৫ সালে বাজারে দৈনিক প্রায় সাত লাখ ব্যারেল অতিরিক্ত সরবরাহ থাকতে পারে। বিষয়টি হলো তেলের দাম বাগাতে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো যে এত দিন উৎপাদন হ্রাসের ধারায় ছিল সেই ধারা থেকে তারা বেরিয়ে আসছে শিগগিরই। বাজারে সরবরাহ বাড়বে। তখন দাম স্বাভাবিকভাবেই কমে আসবে।

জেপি মরগ্যান ও রাবোব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের মজুত ২০১৭ সালের পর এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে। তবে ব্রাজিল ও গায়ানা থেকে অতিরিক্ত সরবরাহ চাপ কমাতে সহায়ক হবে। ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেল পরিবহণের প্রধান পথ হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে দাম বাড়তে পারে।

সরবরাহ নিয়ে ভিন্নমতও আছে। এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) ২০২৫ সালের জন্য বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের চাহিদার পূর্বাভাস দৈনিক তিন লাখ ব্যারেল কমিয়ে এনেছে। সংশোধিত পূর্বাভাসে দৈনিক ১০ কোটি ৪৩ লাখ ব্যারেল চাহিদার কথা বলেছে সংস্থাটি।

এ ছাড়া ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো ২০২৪ ও ২০২৫ সালে চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস সংশোধন করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে