বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারে মিউচু্যয়াল ফান্ডের ভূমিকা খুবই নগণ্য। কাঙ্ক্ষিত পুঁজিবাজার দেখতে চাইলে মিউচু্যয়াল ফান্ডের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) কাজ শুরু করেছে। সম্প্রতি 'যায়যায়দিন'-এ প্রকাশিত 'ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে করণীয়' শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিএসইসি ও আইসিবি কর্তৃপক্ষের আলোচনা ওই প্রতিবেদনের যথার্থতা প্রমাণিত হয়েছে। তাই এই মুহূর্তে মিউচু্যয়াল ফান্ডের প্রতি আস্থা ফেরাতে ও পুঁজিবাজারে তহবিল প্রবাহ বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।
দক্ষ বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনার জন্য 'রিলায়েন্স ফার্স্ট মিউচু্যয়াল ফান্ড'-এর তালিকাভুক্তি থেকে অদ্যাবধি হিসাব বিবরণী ও পত্রকোষ ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনাপূর্বক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ। সভরেন গ্যারান্টির ভিত্তিতে তহবিল সংগ্রহ। আইসিবি ক্যাপিটাল, আইসিবি এসেট ম্যানেজমেন্ট ও আইসিবিকে উদ্যোক্তা করে ২০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার একটি বেমেয়াদি মিউচু্যয়াল ফান্ড অনুমোদন করা।
ওই ফান্ডের উদ্দেশ্যে হবে- বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত এই ফান্ডে শুধুমাত্র পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মেয়াদি মিউচু্যয়াল ফান্ড ক্রয় করতে হবে। আস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিক্রি বন্ধ রাখা। এই মিউচু্যয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে বিএসইসি বিনিয়োগ নীতিমালা রহিত করা। এই মিউচু্যয়াল ফান্ডকে বছরে ১২ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে এবং তা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে পরিশোধ করতে হবে। তহবিলের আকার বাড়ানোর জন্য প্রচারণা চালানো। মিউচু্যয়াল ফান্ডের প্রতি যখন আস্থা ফিরে আসবে তখন মিউচু্যয়াল ফান্ডের নতুন আইপিও ইসু্যর মাধ্যমে বাজারে মূলধন যোগান দিতে হবে।
বাজার মূলধনের ২৫ শতাংশ মিউচু্যয়াল ফান্ড না হওয়া পর্যন্ত বহুজাতিক কোম্পানি ও সরকারি কোম্পানি ব্যতীত অন্যান্য আইপিও বন্ধ রাখা। বিনিয়োগকারীদের মিউচু্যয়াল ফান্ডমুখী করার পর এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তার পর উক্ত মিউচু্যয়াল ফান্ডটি মিউচু্যয়াল ফান্ডের বিনিয়োগ নীতিমালা মেনে চলবে।
প্রাথমিকভাবে বিএসইসি ও আইসিবিকে উপরোক্ত উদ্যোগ গ্রহণের সঙ্গে ২০ অক্টোবরের আইসিবি প্রস্তাবনা বিবেচনা করা যেতে পারে। তাছাড়া আইসিবি একটি কমিটি গঠন করে বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজারে মিউচু্যয়াল ফান্ডের কার্যক্রম পর্যালোচনাপূর্বক এই খাতকে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে রূপান্তরের জন্য বিএসইসিতে প্রস্তাবনা জমা দিতে পারে।