শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে, বেড়েছে লেনদেনও। মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস বাজারটিতে মূল্য সূচক বাড়ল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এতে এ বাজারটিতেও মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ার কেলেঙ্কারির মাধ্যমে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সুবিধা দেওয়া হবে- এমন ঘোষণা দেওয়ার পর বাজারে সক্রিয় হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে লেনদেন ও সূচক বাড়ছে।
এর আগে গত সপ্তাহের চার কার্যদিবস এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হয়। এই দরপতনের মধ্যে রোববার (২০ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, অতীতের দুরবস্থা ও শেয়ার কেলেঙ্কারির মাধ্যমে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার সুবিধা দেবে।
তবে কী ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছর মেয়াদে অর্থনীতির অন্যান্য খাতের মতো পুঁজিবাজারেও অবাধ লুটতরাজ সংঘটিত হয়েছে। এ সময়ে অসংখ্য দুর্বল ও প্রায় অস্তিত্বহীন কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এ কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারের জন্য আজ বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্রমেই এসব কোম্পানির আসল চেহারা প্রকাশিত হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, বাজারে লাগামহীন কারসাজির মাধ্যমে দুর্বল মৌলভিত্তির, জাঙ্ক কোম্পানির শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফ্লোরপ্রাইস আরোপ, সার্কিট ব্রেকারের ঊর্ধ্বসীমা ও নিম্নসীমায় নানা কৃত্রিম ব্যবস্থায় বাজারের এ অবস্থা ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমন বিজ্ঞপ্তি আসার পর টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে সোমবার শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। ডিএসইতে বাড়ে সবকটি মূল্য সূচক। তবে দাম কমার তালিকায় ছিল বেশি প্রতিষ্ঠান।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে মূল্য সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সূচকের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে।
এমনকি লেনদেনের শেষদিকে দাম বাড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে দাম বাড়ার তালিকায় সিংহভাগ প্রতিষ্ঠান নাম লেখানোর পাশাপাশি সবকটি মূল্য সূচকের বড় উত্থান দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৩০৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৫টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।