ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পুঁজিবাজার দ্রম্নত আস্থা ফেরানোর দাবি

বাজার মূলধনের ২৫ শতাংশ অংশগ্রহণ মেয়াদি বা বেমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড না হওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো আইপিও, রাইট শেয়ার ইসু্য বা আরপিও দেওয়া যাবে না

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
দীর্ঘ অপশাসনের যাতাকলে দেশের অন্যান্য খাতের মতো পুঁজিবাজারকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। যেহেতু পুঁজিবাজার একটি দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি, সেহেতু দ্রম্নত বাজারের প্রতি অংশীজনদের আস্থা ফেরানো আবশ্যক। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা একজন নোবেল বিজয়ী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ এবং সালেহউদ্দীন আহমেদ ও ওয়াহিদ উদ্দীন মাহমুদের মতো আন্তর্জাতিক মানের অর্থনীতিবিদ। তাই অংশীজন এবং বাজার বিশ্লেষক আশা প্রকাশ করেন যে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে এই সরকার বাজারের প্রতি আস্থা ফেরাতে নিম্নের পদক্ষেপগুলো দ্রম্নত গ্রহণ করবেন। ইতিমধ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের জন্য নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ক. পুঁজিবাজার বিষয়ক প্রাথমিক ধারণা পোষণ করেন, এই রকম সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন বা বর্তমান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। খ. ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্য থেকে অন্তত ২ জন প্রতিনিধি। গ. ব্রোকার হাউজের অথরাইজড একজন প্রতিনিধি। ঘ. পুঁজিবাজার সাংবাদিক বিটের একজন প্রতিনিধি। ঙ. ডিএসই, সিএসই, ডিবিএ, বিএমবিএম এবং এএমসি থেকে একজন প্রতিনিধি। উপরোক্ত টাস্কফোর্স সরকার গঠিত অন্যান্য সংস্কার কমিশনের মতো নূ্যনতম ৩ মাসের মধ্যে পুঁজিবাজার সংস্কার বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের জন্য অর্থমন্ত্রণালয় ও সরকারের কাছে উপস্থাপন করবেন। এছাড়া বাজারের নিম্নমুখী প্রবণতা রোধকল্পে নিম্নোক্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে। ক. সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের কারণে বর্তমান কমিশন দ্বারা আরোপিত জরিমানার অর্থ দায়ী ব্যক্তিদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে সিএমএসএফ ফান্ডে স্থানান্তর করা ও পরবর্তীতে বিগত দিনে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মাঝে বণ্টন করা। খ. পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সব মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের উদ্যক্তা অ-প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সেল বন্ধ রেখে সাধারণ ও বিদেশি সব ইউনিট সিএমএসএফ অর্থ দিয়ে আইসিবির মাধ্যমে ক্রয় করা। গ. উপরোক্ত কার্যক্রমের ফলে বাজারে মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের ব্যাপক চাহিদা হবে। ঠিক এই মুহূর্তে আইসিবি কর্তৃক নতুন মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের আইপিও ইসু্য করতে হবে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও মিউচুয়াল ফান্ডের প্রচারণা করতে হবে। ঘ. আইসিবি এএমসির অধীনে সিএমএসএফকে উদ্যোক্তা করে নূ্যনতম ২০০ কোটি টাকা মূল্যের একটা বেমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড ইসু্য করা যেতে পারে। এই ফান্ডের বৈশিষ্ট্য হবে নিম্নরূপ: প্রতি বছর নূ্যনতম ১২ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। লভ্যাংশ প্রতি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রদান করতে হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। দেশের সব ব্যাংক বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে বিক্রয় প্রতিনিধি নিয়োগ করতে হবে। যেহেতু এএমসি ইসু্য করা হয় পুঁজিবাজারে তহবিল প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য সেহেতু বিএসইসি কর্তৃক বিগত সময়ে এএমসি সনদ ইস্যকৃত প্রতিষ্ঠানকে নূ্যনতম ১ মাসের মধ্যে অন্তত ৫০ কোটি টাকার মেয়াদি বা বেমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড আনতে হবে। অন্যথায় সনদ বাতিল করতে হবে। বাজার মূলধনের ২৫ শতাংশ অংশগ্রহণ মেয়াদি বা বেমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড না হওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো আইপিও, রাইট শেয়ার ইসু্য বা আরপিও দেওয়া যাবে না।