চলতি বছরের প্রথম ৯ মাস
মধ্যপ্রাচ্যে গ্রিন বন্ড ইসু্য ১ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে গ্রিন বন্ড ইসু্যর পরিমাণ ১ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি বন্ড ইসু্য হয়েছে সৌদি আবর ও সংযুক্ত আবর আমিরাতে (ইউএই)। তবে এসব বন্ডের মূল্য ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ১৮ শতাংশ কমেছে। সম্প্রতি মার্কিন ক্রেডিট রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গেস্নাবালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর আরব নিউজ।
গ্রিন বা টেকসই বন্ড হলো বিশেষ ধরনের ঋণপত্র যা পরিবেশবান্ধব প্রকল্পের জন্য তহবিল সংগ্রহে ব্যবহার হয়। এসব বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ নবায়নযোগ্য বিদু্যৎ, জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি, পরিচ্ছছন্ন পরিবহণ এবং টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো কাজে ব্যবহার করা হয়।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যে এ ধরনের বন্ড ইসু্য চলতি বছরের প্রথমার্ধে বাড়লেও তৃতীয় প্রান্তিকে কমে গেছে। উচ্চ সুদহার ও কপ সম্মেলনের প্রভাবে বন্ড ইসু্য কমে থাকতে পারে।
এসঅ্যান্ডপি গেস্নাবাল জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী আগামী দিনগুলোয় গ্রিন বন্ড ইসু্য বাড়বে। তবে ইউএই ও সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি বাড়বে। ব্যাংকগুলোর সহায়তায় ইসু্যর পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করছে বলেও উলেস্নখ করেছে সংস্থাটি।
বিশ্বের প্রথম সার্বভৌম সম্পদ তহবিল হিসেবে সৌদি আরবের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) ২০২২ সালে ৩০০ কোটি ডলারের একটি মাল্টি-ট্রাঞ্চ গ্রিন বন্ড ইসু্য করে। এরপর ২০২৩ সালে আরও ৫০০ কোটি ডলারের বন্ড ইসু্য করে।
পিআইএফ তাদের সর্বশেষ বরাদ্দ ও প্রভাব প্রতিবেদনে জানায়, গ্রিন বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৮৫০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৫২০ কোটি ডলার পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বরের শেষে ইসু্যর পরিমাণ কমে যাওয়ার বিষয়ে এসঅ্যান্ডপি গেস্নাবাল বলছে, চলতি বছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে মধ্যপ্রাচ্যে বৈশ্বিক প্রবণতার তুলনায় টেকসই কার্যক্রমে অর্থায়নের পরিমাণ বাড়ে। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে এসে তা কমে যায়। তবে এ অঞ্চলে ধারাবাহিকভাবে বন্ড ইসু্য হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, টেকসই কৌশল এবং নীতি সংস্কারের সঙ্গে সংগতি বজায় রাখার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে নিট-জিরো নীতি বাস্তবায়ন দ্রম্নততর করার জন্য টেকসই বন্ড ইসু্য প্রয়োজন হতে পারে।
এসঅ্যান্ডপি গেস্নাবাল বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি এবং সুদহার পরিবর্তনের ওপর ভিত্তিতে এ ধরনের বন্ড ইসু্যর পরিমাণ ওঠানামা করে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে বিশ্বব্যাপী ৭১০ কোটি ডলারের টেকসই ইসলামিক বন্ড (সুকুক) ইসু্য হয়েছে যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ কম।
একই সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই সুকুক ইসু্য অপরিবর্তিত রয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ অঞ্চলে ৬১৯ কোটি ডলারের সুকুক ইসু্য হয়েছে।
এসঅ্যান্ডপি গেস্নাবাল বলছে, এ অঞ্চলে টেকসই সুকুকের হিস্যা বাড়ছে। চলতি বছর টেকসই বন্ড ইসু্যর ৩৫-৪০ শতাংশই ছিল সুকুক যা ২০২৩ সালের শেষেও ২৫-৩০ শতাংশ ছিল।
মুডিসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টেকসই সুকুক ইসলামী ও প্রচলিত উভয় বিনিয়োগকারীর জন্য আকর্ষণীয়। তাছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো জ্বালানি রূপান্তর পরিকল্পনা ও নবায়নযোগ্য লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করছে। এ অবস্থায় গ্রিন সুকুক ইসু্য আগামী মাসগুলোয় আরও বাড়বে।