অস্ট্রেলিয়ায় কর্মসংস্থান বাড়ার হার গত মাসে পূর্বাভাসের তুলনায় ষষ্ঠ মাসের মতো ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। তবে একই সময়ে দেশটিতে বেকারত্বের হার উলেস্নখযোগ্য পরিমাণে বাড়ে কিংবা কমেনি। অস্ট্রেলিয়ায় কর্মসংস্থান বাড়ার হার গত মাসে পূর্বাভাসের তুলনায় ষষ্ঠ মাসের মতো ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। তবে একই সময়ে দেশটিতে বেকারত্বের হার উলেস্নখযোগ্য পরিমাণে বাড়ে কিংবা কমেনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি নির্দেশ করে অস্ট্রেলিয়ার শ্রমবাজারের কর্মসংস্থান তৈরির তুলনায় বেকারের সংখ্যা নগণ্য। এ অবস্থায় বছরের শেষদিকে সুদহার কমানোর প্রত্যাশা কমেছে। খবর রয়টার্স।
অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বিনিময় হার এক মাস ধরে সর্বনিম্নে অবস্থান করছিল। বর্তমানে তা দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে দশমিক ৬৭ ডলারে পৌঁছেছে। একই সময়ে তিন বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের ইল্ড (মুনাফা) ৭ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ৩ দশমিক ৮৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
কর্মসংস্থান সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশের পর আগামী ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়া (আরবিএ) কর্তৃক প্রথমবারের মতো সুদহার কমানোর সম্ভাবনা কমে গেছে। এর আগে ৪৬ শতাংশ সম্ভাবনার প্রাক্কলন করা হলেও এখন তা কমে ৩০ শতাংশে নেমে গেছে। অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে আগামী বছরের ফেব্রম্নয়ারিতে সুদহার কমানো হবে কিনা, তা নিয়েও। এক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ সম্ভাবনা দেখছেন বিনিয়োগকারীরা।
ডাচ আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান আইএনজির এশিয়া-প্যাসিফিক গবেষণা বিভাগের প্রধান রবার্ট কার্নেল বলেন, 'আমরা এর আগে আরবিএ কর্তৃক ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকের আগে সুদহার না কমানোর পূর্বাভাস দিয়েছিলাম। এটি সংশোধনের কোনো যৌক্তিক কারণ দেখছি না। কিছু সম্ভাবনা থাকলেও তা অর্থনীতির জন্য আক্রমণাত্মক হতে পারে।'
অস্ট্রেলিয়ার পরিসংখ্যান বু্যরোর (এবিএস) তথ্য থেকে জানা যায়, সেপ্টেম্বরে নিট কর্মসংস্থান ২৫ হাজার বাড়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। বাস্তবে তা বেড়ে ৬৪ হাজার ১০০তে উন্নীত হয়েছে। এর আগে সংশোধিত পূর্বাভাসে আগস্টে ৪২ হাজার ৬০০টি কর্মসংস্থান তৈরির কথা বলা হয়েছিল।
এবিএস আরও জানায়, ছয় মাস ধরে বেকারত্বের হার নিম্নমুখী প্রবণতায় সংশোধিত ৪ দশমিক ১ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে। শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার রেকর্ড ৬৭ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছেছে। এবিএসের শ্রম পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান বিয়র্ন জারভিস বলেন, '?বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ খোঁজার জন্য এখনো অনেক মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে।'
অস্ট্রেলিয়ায় আন্তঃব্যাংক লেনদেনের বর্তমান সুদহার ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা কভিড-১৯ মহামারিকালে ছিল দশমিক ১ শতাংশ। এ হার বিবেচনায় গত বছরের নভেম্বর থেকে সুদহার স্থির রেখেছে আরবিএ। তবে মূল্যস্ফীতি ২-৩ শতাংশে নামিয়ে আনার পদক্ষেপ হিসেবে এটিকে যথেষ্ট কঠোর মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে শ্রমবাজারে ধীরগতি তৈরি হলেও মৌলিক (কোর) মূল্যস্ফীতি উলেস্নখযোগ্য বাড়ে বা কমেনি। ফলে চলতি বছর নাগাদ সুদহার কমানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে আরবিএ। প্রসঙ্গত, বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদহার কমিয়ে আনছে।