রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১
সর্বজনীন পেনশন স্কিম

চলতি মাসেই মুনাফা পাচ্ছেন স্কিমের আওতাধারীরা

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
  ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
চলতি মাসেই মুনাফা পাচ্ছেন স্কিমের আওতাধারীরা

বর্তমানে দেশে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় রয়েছে তিন লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষ। এখন পর্যন্ত তাদের জমাকৃত চাঁদার পরিমাণ প্রায় ১৩১ কোটি টাকা। যার মধ্যে ১২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। আর এই বিনিয়োগ থেকে যে মুনাফা হয়েছে, তা চলতি মাসেই পেনশন স্কিমের আওতায় আসাদের হিসাবে বণ্টন করা হবে।

সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পেনশন স্কিমে জমা পড়া টাকার সিংহভাগ সরকারি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়েছে। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বিনিয়োগ থেকে আসা মুনাফা হিসাব করা হবে। এই মুনাফা চলতি মাসেই আনুপাতিক হারে স্কিম গ্রহণকারীদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। স্কিম গ্রহণকারীরা তাদের হিসাবে গিয়ে জমা করা টাকা এবং মুনাফা দেখতে পারবেন। তবে এই হিসাব থেকে কেউ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন না।

এদিকে চলতি সপ্তাহে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিভিন্ন বিষয় উপস্থান করা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়- বর্তমানে সর্বজনীন পেনশন স্কিম যেভাবে চলছে, সেভাবেই চালু থাকবে।

সর্বস্তরের জনগণকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনতে গত বছরের ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করে সরকার। প্রাথমিকভাবে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা এবং সমতায় এই চার স্কিম নিয়ে সর্বজনীন পেনশন চালু করা হয়।

পরে সব স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিমে 'প্রত্যয় স্কিম' নামে নতুন স্কিম চালু করার ঘোষণা দেওয়া হয়। গত ১ জুলাই থেকে এই স্কিম কর্যকর হয়। তবে শিক্ষকদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পরে প্রত্যায় স্কিম বাতিল করা হয়। সে হিসাবে বর্তমানে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা এবং সমতা এই চারটি স্কিম চালু রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৪ অক্টোবর বিকেল পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে চাঁদা পরিশোধ করে নিবন্ধন সম্পন্ন করেন তিন লাখ ৭২ হাজার ৩৭৮ জন। আর তাদের জমা চাঁদার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩০ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১২৪ কোটি ৯৯ লাখ ৫৫ হাজার ৬৬৯ টাকা সরকারি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়েছে।

পেনশন স্কিমে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন দরিদ্র মানুষ, যাদের বার্ষিক আয় সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা। এই আয়ের মানুষদের জন্য চালু করা হয়েছে সমতা স্কিম। এই স্কিমের মাসিক চাঁদার পরিমাণ এক হাজার টাকা। এর মধ্যে ৫০০ টাকা স্কিম গ্রহণকারী দেবেন এবং বাকি ৫০০ টাকা সরকার থেকে দেওয়া হবে। এই স্কিমে নিবন্ধনকারীর সংখ্যা দুই লাখ ৮৫ হাজার ৮৮৪ জন। আর জমা পড়া চাঁদার পরিমাণ ৪১ কোটি ৭০ লাখ ২৯ হাজার টাকা।

অন্যদিকে পেনশন স্কিম গ্রহণ করে চাঁদাবাবদ সবচেয়ে বেশি অর্থ জমা দিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা। তাদের জন্য চালু করা প্রগতি স্কিমে ইতোমধ্যে চাঁদা জমা পড়েছে ৪৭ কোটি ২৫ লাখ ৫০০ টাক। এই স্কিমে নিবন্ধনকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৪১০ জন।

চাঁদা দেওয়া এবং নিবন্ধন করা দুদিক থেকেই সবার নিচে প্রবাসীরা। বিদেশে অবস্থান করা প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য চালু করা হয়ছে প্রবাস স্কিম। এই স্কিম গ্রহণ করে ইতোমধ্যে চাঁদা দিয়েছেন ৯১০ জন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ চার কোটি ৮৫ লাখ ২৪ হাজার টাকা।

এছাড়া অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তি যেমন- কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি ইত্যাদি পেশার ব্যক্তিদের জন্য চালু করা হয়েছে সুরক্ষা স্কিম। এই স্কিম গ্রহণ করে চাঁদা পরিশোধ করেছেন ৬৩ হাজার ১৭৪ জন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

বোর্ড সভার আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা কী করছি তা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। মেজর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। উপদেষ্টা স্যার এটাকে (সর্বজনীন পেনশন স্কিম) জোরদারের পরামর্শ দিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে