রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

ব্যাংকে আগস্টে আমানত কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকা

আগস্ট শেষে ৬১টি ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা। জুলাইয়ে যা ছিল ১৭ লাখ ৪২ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে আমানত কমেছে ১০ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা, শতকরা হিসাবে কমেছে শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ।
যাযাদি রিপোর্ট
  ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
ব্যাংকে আগস্টে আমানত কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও সরকার পতনের ডামাডোলের মাসে ব্যাংকে গ্রাহকরা টাকা রেখেছেন কম; এক মাসের ব্যবধানে আগস্টে আমানত কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকা।

আগের বছর ২০২৩ সালের একই সময় অর্থাৎ জুলাই থেকে পরের মাস আগস্টে আমানত বেড়েছিল ২৩ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত ব্যাংক খাতে আমানতের হালনাগাদ তথ্য বলছে, আগস্ট শেষে ৬১টি ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা। জুলাইয়ে যা ছিল ১৭ লাখ ৪২ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে আমানত কমেছে ১০ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা, শতকরা হিসাবে কমেছে শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ।

এর অর্থ ওই মাসে ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে। জুলাই শেষে ব্যাংকের বাইরে টাকা ছিল দুই লাখ ৯০ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা। আগস্টে তা এক হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে দুই লাখ ৯২ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ক্ষমতার পালাবদলের পর ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো বিপাকে পড়ে। বিশেষ করে চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক গ্রম্নপ এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট তৈরি হয়। সরকার পতনের পর এসব ব্যাংক নিয়ে গুজব ও গুঞ্জনে ব্যাংকগুলোতে টাকা রাখা বন্ধ করে দেয় গ্রাহকরা। উল্টো অনেকে এসব ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে থাকেন। এর প্রভাব পড়েছে আমানত সংগ্রহে।

তার ভাষ্য, ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ওপর এ সময় মূলত ইসলামী ধারার ব্যাংক এবং এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকে গ্রাহকের টাকা জমা না রাখার প্রভাব পড়ে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, 'আগস্টে সরকার পতনের পর ব্যাংকিং খাতের আমানতের ওপর প্রভাব পড়ে। সে সময় অনেক ইসলামী ধারার ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ধারণা করে গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন করেছেন। এতে আমানত অনেক কমে যায়। তবে বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকগুলোর ওপর আস্থা বাড়ছে। ব্যাংকে আমানত ফিরছে।'

বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, 'ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর ওপর অনেকদিন ধরেই এক রকম অনাস্থা তৈরি হয়েছিল। সরকার পতনের পর জনমনে ভীতি তৈরি হয়েছিল এসব ব্যাংকের টাকা পাওয়া যাবে কিনা। সে জন্যই গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন করেছে।'

নানা অনিয়মের মাধ্যমে এসব ব্যাংকের অনেক বড় রকম ক্ষতি করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'কারণ আগে যে গ্রম্নপ এই ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করত, তারা নামে-বেনামে ঋণ নিয়েছে, কিন্তু আর ফেরত দেয়নি। এতে এসব ব্যাংকের আর্থিক খাতের অবস্থা অবনতি হয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে