ব্রোকারেজ হাউজগুলো পুঁজিবাজারের বাইরে বিনিয়োগের সুযোগ চায়। শিবলী রুবাইয়াত কমিশন ৫৭টি ব্রোকারেজ হাউজের প্রায় ৪শ' কোটি টাকা বিনিয়োগ চলতি মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে ফিরিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছিল। ব্রোকারেজ হাউজগুলোর সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ওই বৈঠকে এটি বাতিল চাইবে ডিবিএ।
আজ (সোমবার) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে দুই পক্ষের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে বিএসইসির পক্ষে চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। এদিকে ডিবিএ'র সভাপতি সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে সংগঠনটির পর্ষদ সদস্যদের বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
বৈঠকের বিষয়ে বিএসইসির পাঠানো চিঠিতে উলেস্নখ করা হয়েছে, পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সঙ্গে কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনের মাল্টিপারপাস হলে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম যায়যায়দিনকে বলেন, বিএসইসির বিদায়ী চেয়ারম্যান অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরমধ্যে এটি একটি। আমি মনে করি স্টক ব্রোকার ও ডিলারদের বাইরে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া উচিত। তাই এ বিষয়টি নিয়ে আমরা কমিশনের সঙ্গে আলাপ করব। আরও কিছু আইনি বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব তুলে ধরব।
জানা গেছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৫৭টি স্টক ব্রোকার ও ডিলার শেয়ারবাজারের বাইরে ৪শ' কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তাদের মূল ব্যবসার বাইরে ব্যাংকে আমানত, জমি কেনা, একই গ্রম্নপের অন্য প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান, অতালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ, পরিচালকদের গাড়ি কেনার জন্য ঋণসহ বিভিন্ন খাতে এসব বিনিয়োগ করে।
জানা গেছে, আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্য খাতে বিনিয়োগ ফিরিয়ে আনতে সময় বেঁধে দিয়েছিল বিএসইসি। এই ৫৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারবাজারের বাইরে ৩৯৯ কোটি ৪৯ লাখ ৫২ হাজার ৫৫২ টাকা বিনিয়োগের প্রমাণ পেয়েছে বিএসইসি। আগামী ৩১ অক্টোবরে মধ্যে এই অর্থ প্রতিষ্ঠানগুলোয় ফিরিয়ে আনতে ডিএসইকে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিরিয়ে আনলে শেয়ারবাজারে তারল্য সংকট আরও কমে আসবে।
তবে ব্রোকারেজ হাউজ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজারে মন্দা পরিস্থিতি থাকায় তারা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে রেখেছেন। এতে মাস শেষে কিছু মুনাফা আসে। সেই মুনাফা দিয়ে পরিচালন ব্যয় বহন করা হয়। বর্তমানে লেনদেন কম হওয়ায় অনেকের পরিচালন ব্যয়ে ঘাটতি থাকে।
এই বিষয়ে বিএসইসির বিদায়ী চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়েছে, ডিএসইর কমপস্নায়েন্স প্রতিবেদন এবং স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী থেকে দেখা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠান তাদের নিবন্ধিত মূল ব্যবসায়ের বাইরে অন্য উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যয় করছে।
শেয়ারবাজারের স্বার্থে এই বিষয়ে ডিএসইকে দুটি নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি। এর মধ্যে রয়েছে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে স্টক ব্রোকার ও ডিলার প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্য খাতে বিনিয়োগ করা অর্থ ফিরিয়ে এনে মূল ব্যবসায় ব্যবহার করতে হবে। অর্থ ফিরিয়ে এনে বিনিয়োগ করার বিষয়টি নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিএসইকে।
এই বিষয়ে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে অর্থ ফেরত আসার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসির কাছে কমপস্নায়েন্স প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে ডিএসইকে। অবিলম্বে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বিএসইসি। এ নির্দেশনাটির বাতিল চায় ডিবিএ।