ক্রেতাশূন্য বিলাসবহুল গাড়ির বাজার

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
চলমান অর্থনৈতিক মন্দা ও আকস্মিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে দেশর গাড়ির বাজারে। বিশেষ করে বিলাসবহুল গাড়ি বিক্রি নেই বললেই চলে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন গত জুলাই থেকে সেডান ও স্পোর্ট ইউটিলিটি ভেহিকেলের (এসইউভি) বিলাসবহুল গাড়ির বিক্রি নেমেছে প্রায় শূন্যের কোটায়। ব্যবসায়ীদের দাবি সরকারের পতনের আগে মাসে অন্তত আট শর মতো গাড়ি বিক্রি হতো। এখন ৫ শতাংশ বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) তথ্যও বলছে, গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে কেবল এসইউভি নিবন্ধিত হয়েছে গড়ে ৭০০টির ওপরে। তবে বিআরটিএ সেডানকে সাধারণ গাড়ি হিসেবে নিবন্ধন করে, তাই এই তালিকায় এর পরিসংখ্যান নেই। জার্মান গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অডি এজির ডিজাইন করা বিলাসবহুল গাড়ির দেশের একমাত্র পরিবেশক প্রোগ্রেস মটরস। এসব গাড়ি এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা থেকে তিন কোটি ৯৯ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়। কিন্তু গত জুলাই থেকে একটি গাড়িও বিক্রি হয়নি। প্রোগ্রেস মটরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদ নুসরাত খান জানান, রাজনৈতিক পালাবদল ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে তাদের তেজগাঁও বিক্রয়কেন্দ্রে তেমন কোনো ক্রেতাই আসেননি। এই দুই মাসে প্রায় এক কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। দেখা গেছে কেবল পরিচালন খরচ মেটাতেই মাসে অন্তত ছয়টি গাড়ি বিক্রি করতে হয়। বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি হাবিব উলস্নাহ ডন বলেন, 'সাধারণত ক্রেতারা গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অর্থনীতি নিয়ে মানুষ শঙ্কিত। তাই বিলাসবহুল গাড়ির বিক্রি অনেক কমেছে। অনেকই এখন টয়োটা ক্যামরি ও টয়োটা ক্রাউনের মতো দামি গাড়ির পরিবর্তে ক্রেতারা টয়োটা অ্যাক্সিও ও টয়োটা করোলার মতো একটু কম দামের সেডান গাড়ি কিনছেন। এছাড়া বিক্রি কমেছে টয়োটার ল্যান্ড ক্রুজার, পাজেরো ও হ্যারিয়ার সিরিজের গাড়িতেও। এদিকে আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় দামি গাড়ির দাম আরও বেড়েছে। ফলে গত দুই মাসে এসব গাড়িতে তিন থেকে চার লাখ টাকা বেড়েছে জানান তিনি। এইচএনএস অটোমোবাইলসের হেড অব অপারেশনস শফিকুল ইসলাম বলেন, 'কেউ কল্পনাও করেননি যে হঠাৎ করে বাজারে এতটা মন্দা দেখা দেবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দামি গাড়ির ক্রেতারা তুলনামূলক কম দামের গাড়ি কিনবেন। এছাড়াও গাড়ি কেনার ঋণের উচ্চ সুদের হার গাড়ি বিক্রিকে নিরুৎসাহিত করতে পারে।' সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতির চাপে দেশের মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন। একই সময়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন। সব মিলিয়ে বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। সম্ভাব্য ক্রেতারা আর্থিকভাবে সতর্ক থাকায় বাজার গাড়ি বিক্রির অনুকূলে নেই।