২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় বেড়েছে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। ফলে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঋণের সুদ পরিশোধ এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
গতকাল প্রকাশিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঋণের সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের জাতীয় বাজেটের ছয় ভাগের এক ভাগেরও বেশি।
সরকারের ভর্তুকি ব্যয় কিছুটা কমলেও রাজস্ব আদায়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।
প্রাথমিকভাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঋণের সুদ বাবদ ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল সরকার। তবে সংশোধিত বাজেটে এই অংক বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে ঋণের সুদ পরিশোধ সংশোধিত বাজেটের বরাদ্দকে ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিসংখ্যান বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকারের ঋণের ওপর নির্ভরশীলতার ইঙ্গিত দেয়।
গত অর্থবছর বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ ৬০ দশমিক ৫৩ শতাংশ বা ১৫ হাজার ১৫০ কোটি টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া দেশীয় উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদ ২০ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়ে ৯৯ হাজার ৬০৬ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট সুদ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৯২ হাজার ১১০ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে ঋণ নেওয়ায় মোট ঋণের পরিমাণ বাড়ছে।
২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা, যা দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩৩ দশমিক ৭৮ শতাংশের সমান।
অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবরণীতে (এমটিএমপিএস) বলা হয়েছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ পরিশোধ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে।
প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে, জাতীয় বাজেটের শতাংশ হিসাবে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের অনুপাত ২০২২ অর্থবছরের শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৭ অর্থবছরে দুই দশমিক ছয় শতাংশ হতে পারে।