ওপেকের পূর্বাভাস
দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়তে পারে
প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
ভারত, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় আগামী কয়েক বছরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা আরও বাড়বে। এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের জন্য বিশ্বের অনেক দেশ এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। এ কারণে মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়তে পারে। মঙ্গলবার প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড অয়েল আউটলুক ২০২৪ সংস্করণে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক। খবর রয়টার্স।
ওপেকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৪৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা দৈনিক গড়ে ১১ কোটি ৮৯ লাখ ব্যারেলে পৌঁছবে। এ পরিমাণ আগের বছর প্রকাশিত প্রতিবেদনের তুলনায় দৈনিক গড়ে প্রায় ২৯ লাখ ব্যারেল বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা দৈনিক গড়ে ১২ কোটি ১ লাখ ব্যারেলে পৌঁছতে পারে।
ওপেকের জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাস অন্যান্য সংস্থার দেওয়া পূর্বাভাসের তুলনায় অনেক বেশি। ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম (বিপি) আগে জানায়, ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির ব্যবহার বেড়ে সর্বোচ্চে পৌঁছবে। তবে ২০৫০ সালের মধ্যে তা দৈনিক গড়ে ৭ কোটি ৫০ লাখ ব্যারেলে দাঁড়াবে। অন্যদিকে এক্সন মোবিল আশা করছে, ২০৫০ সাল পর্যন্ত এর চাহিদা দৈনিক গড়ে ১০ কোটি ব্যারেলের ওপর থাকতে পারে।
ওপেকের সেক্রেটারি জেনারেল হাইথাম আল গহাইস প্রতিবেদনটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, '?বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোয় ভবিষ্যতে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে দেশগুলোর জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও নগরায়ণ।'
তিনি জানান, বিশ্বে ?বাড়তি জ্বালানি ওপেকভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। কারণ সংস্থাটির ১২টি সদস্য দেশই জ্বালানি তেল খাত থেকে আয়ের ওপর আর্থিকভাবে বেশি নির্ভরশীল।
প্রতিবেদন ওপেক জানায়, বিশ্বের অনেক দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কিছুটা দেরি হতে পারে। এছাড়া অনেক বিদু্যৎচালিত গাড়ি (ইভি) নির্মাতা তাদের উৎপাদন আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা সংকুচিত করেছে।
ওপেক বিশ্বব্যাপী মধ্যম মেয়াদে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাসও সংশোধন করেছে। সংস্থাটি জানায়, গত বছরের তুলনায় বিভিন্ন দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, তুলনামূলক কম মুদ্রাস্ফীতি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদহার কমানো শুরু করছে। এ কারণে মধ্যম মেয়াদেও বিশ্বে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়তে পারে।
ওপেকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৮ সালে বিশ্বে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা দৈনিক গড়ে ১১ কোটি ১০ লাখ ব্যারেলে পৌঁছবে। এবারের এ পূর্বাভাস এর আগের বছর দেওয়া প্রাক্কলনের তুলনায় দৈনিক গড়ে আট লাখ ব্যারেল বেশি। ২০২৯ সাল পর্যন্ত এটি পৌঁছতে পারে দৈনিক ১১ কোটি ২৩ লাখ ব্যারেলে।
ওপেকের ২০২৯ সালের পূর্বাভাস ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) দেওয়া পূর্বাভাসের তুলনায় দৈনিক গড়ে ৬০ লাখ ব্যারেলের বেশি। জুনে সংস্থাটি জানিয়েছিল, ২০২৯ সাল পর্যন্ত বিশ্বে জ্বালানি তেলের চাহিদা ১০ কোটি ৫৬ লাখ ব্যারেল হতে পারে। দুই সংস্থার দেওয়া পূর্বাভাসের এ ব্যবধান ওপেকভুক্ত দেশ কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্মিলিত উৎপাদনের চেয়েও বেশি।