পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার কারণ ক্ষতিয়ে দেখতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-কে নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসির এই নির্দেশের পর শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দামে পতন হয়েছে।
সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে। এতে অল্প দিনের মধ্যেই কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের এই অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণ ক্ষতিয়ে দেখতে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ডিএসই-কে নির্দেশ দেয় বিএসইসি। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে বিএসইসির সার্ভিলেন্স বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতন হওয়ার পর ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার পালে হাওয়া লাগে। তবে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দাম হু হু করে বাড়তে থাকে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর ইসলামী ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৩৯ টাকা ২০ পয়সা। সেখান থেকে দফায় দফায় দাম বেড়ে ২৫ সেপ্টেম্বর প্রতিটি শেয়ারের দাম ৭০ টাকা ৪০ পয়সায় উঠেছে। অর্থাৎ ১৫ দিনের মধ্যে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৩০ টাকার ওপর বেড়ে যায়।
এর প্রেক্ষিতে ২৫ সেপ্টেম্বর ডিএসইর প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও)-কে দিয়ে দিয়ে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার বিষয়টি তদন্ত করতে বলে বিএসইসি। চিঠিতে, চলতি বছরের ৬ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়ার বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। বাজারে কারসাজি, ইনসাইডার ট্রেডিংসহ অন্যান্য অনিয়ম ক্ষতি দেখতেও ডিএসই-কে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই নির্দেশনার পর বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দরপতনের মধ্যে পড়ে। একপর্যায়ে ক্রেতা সংকট দেখা দেওয়ায় দিনের সর্বনিম্ন দামেও নেমে যায় ব্যাংকটির শেয়ার দাম। অবশ্য, পরে ক্রেতা ফিরলেও বড় পতন থেকে রক্ষা পায়নি।
দিনের লেনদেন শেষে আগের দিনের তুলনায় প্রতিটি শেয়ারের দাম ৬ টাকা কমে ৬৪ টাকা ৪০ পয়সা নেমে গেছে। অর্থাৎ শেয়ারের দাম কমেছে ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। এতে সম্মিলিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে ৯৬৫ কেটি ৯৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।
১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ১৬০ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৮টি। এর মধ্যে বর্তমানে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে আছে মাত্র দশমিক ১৮ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭৩ দশমিক ২৭ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৭ দশমিক ৯১ শতাংশ আছে।