সুইজারল্যান্ডে আদানি গ্রম্নপ-সংশ্লিষ্ট সন্দেহে ৩১ কোটি ডলার জব্দ
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আদানি গ্রম্নপের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে মার্কিন শর্ট সেলিং প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। তবে এ সংস্থার প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই সুইজারল্যান্ডে এ তদন্ত শুরু হয়
প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
আদানি গ্রম্নপের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে সুইজারল্যান্ডের ছয়টি ব্যাংকে রাখা ৩১ কোটি ডলার জব্দের আদেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত। সংশ্লিষ্ট কৌঁসুলিদের সন্দেহ, ব্যাংক হিসাবগুলোর মালিক তাইওয়ানিজ নাগরিক চ্যাং চুং-লিং আদানি গ্রম্নপের হয়ে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়ানোর কাজ করছিলেন। খবর এফটি।
২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে আদানি গ্রম্নপের বিরুদ্ধে অপরাধ ও অর্থ পাচারের অভিযোগে সুইজারল্যান্ডে তদন্ত চলছে। সম্প্রতি ফেডারেল ক্রিমিনাল কোর্টের এক সিদ্ধান্তে দেখা গেছে, সম্পদ অবরুদ্ধকরণের বিরুদ্ধে করা একটি আপিল খারিজ করে দিয়েছেন দেশটির আদালত।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আদানি গ্রম্নপের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে মার্কিন শর্ট সেলিং প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। তবে এ সংস্থার প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই সুইজারল্যান্ডে এ তদন্ত শুরু হয়। ওই প্রতিবেদনে আদানি গ্রম্নপের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে 'করপোরেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রতারণা' বলে উলেস্নখ করা হয়। সেখানে বলা হয়, তৃতীয় পক্ষকে ব্যবহার করে শেয়ারদর কৃত্রিমভাবে বাড়িয়েছে আদানি।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ বিভিন্ন কোম্পানির বিরুদ্ধে আর্থিক তদন্ত পরিচালনা করে। ওই প্রতিবেদনের পরপরই ভারতের গুজরাটভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠীটির শেয়ারদরে ব্যাপক পতন ঘটে। এ ছাড়া সম্প্রতি আরেক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, আদানি গ্রম্নপের অফশোর ফান্ডে অংশীদারত্ব ছিল ভারতের পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়ার (এসইবিআই) চেয়ারপারসন মাধবি পুরি বুচ ও তার স্বামী ধবল বুচের।
সুইস আইন কর্মকর্তাদের সন্দেহ, অভিযুক্ত ব্যক্তি জব্দকৃত হিসাবগুলোর আসল মালিক নন। বরং আদানি গ্রম্নপ তাকে বড় অংকের অর্থ দিয়েছে, যা পরে গ্রম্নপটির তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা হয়েছিল। কর্মকর্তারা দাবি করেন, এর মাধ্যমে নিয়ম লঙ্ঘন করে আদানি গ্রম্নপের শেয়ারদর কৃত্রিমভাবে বাড়ানোর হয়েছিল। এমন সন্দেহের ভিত্তিতে হিসাবগুলো জব্দ করেছেন আদালত। তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।
এদিকে সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে আদানি গ্রম্নপ। সুইস ক্রিমিনাল কোর্টও অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করেননি। তবে হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদন ও এফটির প্রতিবেদনে আদানি গ্রম্নপ ও সন্দেহভাজন তাইওয়ানিজ ব্যবসায়ী চাং চুং-লিংয়ের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। আপিলের আবেদনকারী আইনজীবীও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নিজেদের বিদেশি হোল্ডিং 'কাঠামোগতভাবে স্বচ্ছ, উন্মুক্ত ও সংশ্লিষ্ট সব ধরনের আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ' উলেস্নখ করে আদানি গ্রম্নপ জানিয়েছে, 'সুইস কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আমাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য বা ব্যাখ্যা চায়নি। এ অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, অযৌক্তিক ও হাস্যকর। আমাদের গ্রম্নপের সুনাম ও বাজারমূল্যের অপূরণীয় ক্ষতি করতে এটি আরেকটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।'
এতদিন পরিচয় গোপন থাকলেও এখন বলা হচ্ছে, চ্যাং আদানি গ্রম্নপের দীর্ঘদিনের সহযোগী। আগের এক প্রতিবেদনে এফটি জানিয়েছিল, তিনি ছিলেন সেই দুই বিনিয়োগকারীর একজন, যারা অফশোর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আদানির শেয়ার ব্যবসা করেছেন। এর দেখাশোনা করতেন গ্রম্নপের কর্ণধার গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানি।