বিদেশি সহায়তায় আশা দেখছেন না অর্থ-উপদেষ্টা

সরকারি অর্থের অপচয় কমানোরও আহ্বান জানিয়েছেন। সরকারের এই মুহূর্তে অর্থের প্রয়োজন। সরকারি খরচ ও অন্য ব্যয় নির্বাহে অর্থ প্রয়োজন

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
সালেহউদ্দিন আহমেদ
বিদেশি সহায়তা খুব একটা পাওয়া যাবে না জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর কর্মকর্তাদের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর ওপর জোর দিতে বলেছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। পাশাপাশি সরকারি অর্থের অপচয় কমানোরও আহ্বান জানিয়েছেন। সরকারের এই মুহূর্তে অর্থের প্রয়োজন। সরকারি খরচ ও অন্য ব্যয় নির্বাহে অর্থ প্রয়োজন। শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। 'অর্থ আইন, ২০২৪-এর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে আনীত পরিবর্তন' বিষয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ট্যাকসেশন) অ্যাসোসিয়েশন। আলোচনা সভায় সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা কমাব না। আমাদের ঘাটতি বাজেট থাকে। বাজেটের বড় অংশ বাইরে থেকে ঋণ হিসেবে আনতে হয়। দিন দিন ঋণের বোঝা বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করব নিজেরা নিজেদের অর্থের সংস্থান করতে। তবে এটা ঠিক যে নিজেদের অর্থে হবে না, বাইরে থেকেও অর্থ আনতে হবে। তবে লক্ষ্য করতে হবে আমরা যেন পরমুখাপেক্ষী না হই।' পরমুখাপেক্ষী হওয়ার বিপদ অন্তর্র্বর্তী সরকার টের পাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'একটা কথা আছে আপনার হাতটা যদি আমার পকেটে থাকে, আমি ডানদিকে গেলে আপনিও যাবেন। আমি বাঁয়ে গেলে আপনিও বাঁয়ে যাবেন। সেটা কিন্তু হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছি। দাতা সংস্থারা যেদিকে বলে যেতে, অবশ্য আমরা চেষ্টা করছি নিজেরা অ্যাসল্ট (প্রতিউত্তর) করতে। ডানদিকে যেতে বললে আমার যাওয়ার কথা বাঁ-দিকে, বাঁ-দিকে গেলে আমার যাওয়ার কথা ডানদিকে। সেটা অনেক সময় সম্ভব হয় না। আমরা চাই না তাদের ওপর নির্ভরশীল হতে।' প্রকল্পগুলো মাঠ পর্যায়ের চাহিদা ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয় না। এর ফলে অর্থের অপচয় হয় জানিয়ে সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, 'যেটা দরকার তার ভিত্তিতে যেন প্রকল্প আসে।' এনবিআরের আইনকে ব্যবসাবান্ধব করার ঘোষণা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, 'আমরা যথেষ্ঠ রাজস্ব আদায় করতে পারছি না। আমরা ঘাটতি বাজেট করছি। পরবর্তী প্রজন্মের ওপর বেশি বেশি ঋণের দায় চাপিয়ে দিচ্ছি। করদাতারা তাদের দেওয়া করের অপচয় দেখতে চায় না।' তিনি বলেন, 'প্রতিবছর বড় অংকের টাকা আমরা কর ছাড় দেই। এটার বড় অংশ ঠিক করলে কর আদায় বাড়বে। আমরা সঠিকভাবে কর আইন প্রয়োগ করতে চাই।' সবাইকে অনলাইনে রিটার্ন দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান বলেন, 'আপনাদের পরিচিতদেরও অনলাইনে রিটার্ন দিতে আহ্বান করবেন। আমাদের আইন-কানুন ব্যবসাবান্ধব করতে হবে। ২০১২ সালে আমরা মূসক আইন করেছি, অথচ ১২ বছরে তার ইংরেজি ভার্সন হয়নি। তাহলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা প্রস্তুতি নিতে পারবেন কীভাবে?' বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কর) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. লুৎফুল আজীম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে আয়করের সংস্কার প্রয়োজন।